প্রতীক্ষমাণ তোমার দ্বারে নয় অচেনা জান কি তা
প্রস্ফুটিত শ্বেত শতদল রাজার দূতী নিবেদিতা।
চিত্তে তোমার লাগল দোলা আনলে ঘরে সমাদরে
ডাক এসেছে বেলুড় যাবার শুনে তোমার হৃদয় ভরে।


সজল বাতাস উছল ধারা নৌকা ছোটে উজান পথে
উথালপাথাল হৃদয় তোমার যাচ্ছ কোথায় স্বর্ণরথে।
বিদগ্ধজন অপেক্ষমাণ দেখেই চিত্ত অভিভূত
কী অপরূপ বিবেক-বিভা ক’রবে বুঝি বৃন্তচ্যুত।


করস্পর্শে চমক লাগে সত্তা বুঝি বিলোপ হবে
কথা যেন বেরচ্ছে না ক্ষণেক তুমি রও নীরবে।
নদীর বুকে ভরা জোয়ার লাগছে গায়ে শীতল হাওয়া
দুটি তারা দুই আকাশের সরছে দূরে চাওয়াপাওয়া।


এত দ্বিধা আত্মদ্বন্দ্ব রাখলে তুলে সংগোপনে
ফিরে এলে জবাব দিয়ে অতি ভারাক্রান্ত মনে।
বাধার প্রাচীর শক্ত কি খুব মনে শুধু প্রশ্ন জাগে
তোমার মতো বিদুষী তো রইবে সদা অগ্রভাগে।


সত্যি তুমি ভাগ্যবতী ক’জনা পায় এমন সুযোগ
নারাজ হলে কীসের ভয়ে যোগীর সাথে হ’ল না যোগ।
যে গুরুভার দেবেন বলে তোমায় তিনি ডেকেছিলেন
প্রাচ্যসাথে প্রতীচ্য-যোগ ক’রবে স্থাপন ভেবেছিলেন।


রবির দিকে তাকিয়ে থাকা মানু্ষের যা অসাধ্য কাজ
বিবেক-দ্যুতি স্নিগ্ধ শীতল দীপ্ত শিখার গেরুয়া সাজ।
তবু তোমার নয়নে জল তাঁর সমুখে অধোবদন
পারলে না তো ভাঙতে বেড়া সত্যি তোমার চায়নি কি মন।


রামকৃষ্ণ পরম ব্রহ্ম-  সহজে তা যায় না বোঝা
সহজ সরল গ্রাম্য সাধক তাঁকে চেনা নয়কো সোজা।
ঠাকুরবাড়ির দর্প এত ক’রল কঠিন শর্ত আরোপ
কখনও তা যায় না মানা চেতনা যে হ’ত বিলোপ।


নিবেদিতা বুলের সাথে তোমাকেও রাখত মনে
কত বড় ভ্রান্তি তোমার এখন তুমি তাঁর কাননে।
যুগস্রষ্টা বিবেক স্বামী জয় করেছেন বিশ্বভুবন
তুমিও তাঁর স্নেহধন্যা নিবেদিতার মতোই স্বজন।