. মা কাছে নাই তাই ছুটে যাই
অজিত কুমার কর
তুমি যখন আমায় ছেড়ে যেতে মামার বাড়ি
নিঝুম ঘরে থাকতে আমার কষ্ট হ’তো ভারী।
তোমার ও’মুখ উঠত ভেসে
বলতো যেন আমায় হেসে
‘দুদিন পরে ফিরবো বাড়ি, কাঁদিস না রে খোকা।’
শুনেই আমার অশ্রু ঝরে
কাটবে রাতি কেমন ক’রে
কে শোনাবে গল্প আমায় আমি যে একরোখা।
ঘুম ভেঙেছে সাতসকালে
বাবা উঠেই যায় গোয়ালে
মনটি আমার পৌঁছে গেছে তখন মোহনপুরে।
রাস্তা আমার জানা ছিল
জানি না কে সাহস দিল
মাঠ পেরিয়ে মামার বাড়ি নয়কো বেশি দূরে।
না জানিয়ে যাচ্ছি আমি, ভাবছে বাবা কতো
মাথায় খেলে দস্যিপনা দুষ্টু ছেলের মতো।
অত কি মা বুদ্ধি আছে
না যদি দেয় যেতে পাছে
তাইতো এমন কর্ম আমার, হাঁটছি দ্রুত পায়ে।
আমায় দেখে অবাক তুমি
ক’রলে আদর অধর চুমি
লোক পাঠিয়ে খবর দিয়ে, চুমুক দিলে চা’য়ে।
দুষ্টু মিষ্টি মামার মেয়ে
আমায় দেখে এলো ধেয়ে
হাতটা ধরে বলল রাধা, চলো পুতুল খেলি।
সকালটা বেশ কেটে গেল
বাজার থেকে মামা এল
দেখেই বলে কী রে খোকা একাই চলে এলি!
তোর তো দেখি সাহস ভারী, শুনল মেয়ে রাধা,
এভারেস্টে পৌঁছাবি ঠিক জয় করে সব বাধা।
খোকা, রাধা আয় এবারে
মামাও ডাকে বারে বারে
মামির তৈরি আসন পাতা, দারুণ পরিপাটি।
বসল মামা আমার পাশে
দেখে রাধা মুচকি হাসে
কাঁসার থালায় ভাত দিয়েছে পাশে তিনটে বাটি।
দু’পিস ভাজা ইলিশ পেটি
পছন্দ খুব আমার এটি
আয়েশ ক’রে খেলাম সবাই ফুটল মুখে হাসি।
রাত পোহালে ফিরতে হবে
জানি না ফের আসবো কবে
প্রণাম সেরে মা আর আমি, বলি, ‘এবার আসি’।
© অজিত কুমার কর