সকাল হ’ল ওঠো এবার খোলা হাওয়ায় ঘুরি
পুব আকাশে নবীন রবির চলছে কারিকুরি।
আলতারঙে রাঙল আকাশ কত যত্নে আঁকা
একটু পরে আর পাবে না বাড়লে বেলা ফাঁকা।


একটি ডাকে নিদ্রা টুটে জাপটে ধরি মাকে
গাছের ডালে কোকিল টিয়া বউ-কথা-কও ডাকে।
ঘন্টাখানেক বেড়াই দুজন মেঠো পথটি ধরে
রাতের শিশির ধানের শিষে মুক্তা হয়ে ঝরে।


ফিরে এসেই পড়তে বসা চলবে নাকো ফাঁকি
আটকে গেলে বানানগুলো তখন মাকে ডাকি।
সহজপাঠের ছড়াগুলো পড়তে দারুণ লাগে
মিষ্টি করে বুঝিয়ে দেয় আমার পড়ার আগে।


মায়ের সাথে সুর মিলিয়ে যখন আমি পড়ি
তখন খুবই সহজ লাগে একটুও না নড়ি।
‘এখন বেলা দশটা বাজে স্কুলের সময় হ’লো
আর দেরি নয় পুকুরে যাও যাচ্ছি আমি চলো।’


আমার হাতে বই ও চাটা মায়ের পিছু আমি
স্কুলে তো আর মা থাকে না সঙ্গ বড় দামী।
মুখটা বড়ই মলিন দেখায় পাঠশালাতে গেলে
একটু পরে তা কেটে যায় সঙ্গীরা সব এলে।


ছুটির সময় কেউ আসে না একাই ঘরে ফিরি
কুমোরপাড়া পরেই বাড়ি নেইকো পথের ছিরি।
বর্ষাকালে কাদায় ভরা আস্তে আস্তে হাঁটি
পুকুরঘাটে দুহাত দিয়ে ছাড়াই কাদামাটি।


বিকেলবেলা খেলাধুলা সাঁঝে আবার পড়া
রাতেরবেলা দুধমাখাভাত মুসুরডালের বড়া।
এসব কথা যায় না ভোলা যখনতখন ভাবি
এই বুঝি মা বলবে ডেকে, ‘খোকন কিছু খাবি’।