সোনালি ধান্য উঠেছে হামারে খুশির অন্ত নাই
ক’দিন একটু কর্মবিরতি বছরে এখন পাই।
গীতাঞ্জলিতে উঠেছে আজিকে নাতিনাতনির দল
কাল প্রত্যুষে পৌঁছোবে ওরা শোনা যাবে কোলাহল।


পাকশালে দিদা কত কী যে করে নেই তার বিশ্রাম
মাছের কালিয়া দোরমা পায়েস  দরদর ঝরে ঘাম।
গেটে ঠকঠক এসে গেছে ওরা শুরু হবে তোলপাড়
জড়িয়ে ধরল দিদাকে সবাই, ‘ছাড়-ছাড়, ওরে ছাড়।’


বড় ঘরে চল পাখার তলায় আনছি ঠাণ্ডা জল
চুপ করে থাকা বড়ই কঠিন ওরা অতি চঞ্চল।
ছোটো মেয়ে বলে কতদিন থেকে গুনেছি কেবল কাল
ভুলিনি এখনো মুখে লেগে আছে পাবদা মাছের ঝাল।


আমিও পারি না অমন রাঁধতে জমে না তেমন স্বাদ
নিজে খুশি নয় কর্তাও তাই খাটুনিটা বরবাদ।
কলকাকলিতে ভরেছে এ’ঘর চেটেপুটে সব সাফ
শেষপাতে এল দধি মিহিদানা রাবড়িতে ভরা কাপ।


নাতনি পরেছে জামদানি শাড়ি পায়ে রুনুঝুনু মল
ঝোলাদুল কানে নাকে নাকছাবি গয়নাতে ঝলমল।
ছোটো নাতনিও কম নয় মোটে সেজেগুজে ফিটফাট
কবরীতে ফুল নয়নে কাজল আধুনিক ঠাটবাট।


কী ব্যাপার সখী কোথা যাও তুমি দাঁড়াও তিলেক কাল
একাকী যেয়ো না সাথে আমি যাই অমনি দু’চোখ লাল।
বুঝেছি বুঝেছি সঙ্গে নেবে না শুধু বল কোথা যাও
ভয় নাই দাদু যাব না হারিয়ে, অভিসারে ধরে নাও।


ঊর্মিসাগরে হাসির ফোয়ারা এক বাণে কুপোকাত
বড় নাতনিও একটু পিছনে সিনেমাতে নির্ঘাত।
বাতাসের বেগে উড়ে গেল গাড়ি টকীজ সুদূরে নয়
জানি আমি বেশ ওরা দুইবোন সাহসী অকুতোভয়।


ক্ষণপরে দেখি কেউ নেই ঘরে পড়ে আছি একলাই
বুঝেছি এবার আটঘাট বাঁধা চকিতে ফুড়ুৎ ফাই।
বিকেলের চা-টা মাঠে মারা গেল ঘনাল অন্ধকার
সন্ধে ছ’টায় ফিরে এলে বলি কাছে আয় একবার।


(মাত্রাবৃত্তে লেখা ১২/৮)