সোঁদরবনে বাঘের ডেরা ওখানেই বাস হরিণের
খাদ্য খাদক একই দ্বীপে কী মহিমা ওই বনের!
কচিপাতার ভক্ত হরিণ ছুটতে পারে খুব বেগে
কখন যে তার শত্রু আসে সতর্ক রয় তাই জেগে।


শিশু হরিণ চালাক অতি বুদ্ধিও বেশ ক্ষুরধার
মায়ের কথা শুনে শুনেই শিখেছে সে চমৎকার।
খেলতে খেলতে কখন গেছে দলের থেকে একটু দূর
বাঘের হালুম-হুলুম শুনে কণ্ঠে বেরোয় করুণ সুর।


মা শুধাল,‘হাঁপাচ্ছিস যে, মলিন কেন তোমার মুখ?’
‘ওই ওদিকে বাঘ এসেছে, আতঙ্কে তাই কাঁপছে বুক।’
‘উল্টোদিকে চল তাহলে দেখতে পাবি ঝরনা লেক
প্রজাপতি উড়ছে কত পেট ফুলিয়ে ডাকছে ভেক।’


শিশুর মনে আনন্দ খুব প্রজাপতি সামনে ওর
গুহার মুখে পৌঁছে গেছে ভিতরে যে আঁধার ঘোর।
প্রজাপতির পিছু পিছু ঢুকল সেও অন্দরে
পিছন ফিরে যেই তাকাল চক্ষু বেয়ে জল ঝরে।


ব্যঘ্রমামা দেখছে তাকে মাংস খেয়ে ফিরল এই
‘এটাই যে তার রাত্রিনিবাস সঙ্গিনী তার এখন নেই।
কী করে যে রেহাই পাবে ভাবছে এখন বাল-হরিণ
বুদ্ধি প্রয়োগ করতে হবে বাঁচার আশা খুবই ক্ষীণ।


হরিণ শুধায়, ‘একলা কেন, মামি গেছে আজ কোথায়?’
ব্যাঘ্র বলে, ‘সন্ধে হলে  আসবে ফিরে আস্তানায়।’
গুহার শেষটা ভীষণ সরু শিশুহরিণ  ভয়ে কাঠ
কোনোক্রমে বাইরে বেরোয় দেখতে পেল ফাঁকা মাঠ।


প্রজাপতির পিছ ছাড়েনি ওই ছিল যে সহায় তার
ভয় না পেয়ে দুঃসময়ে বুদ্ধিবলে পায় সে পার।
এক লহমায় মায়ের কাছে পৌঁছে যেতেই ঢের আদর
‘মানুষের যা অসাধ্য কাজ, করলি নিজে পাসনি ডর।’