উনিশ আসে উনিশ যায় বরাক দিয়ে জল গড়ায়
বাংলাভাষা আন্দোলনে এগারো জন প্রাণ হারায়।
কমলা কি ঘরে রয় মৃত্যুকে সে পায় না ভয়
স্বীকৃতি চাই বাংলাভাষার সংগ্রামে তাই শামিল হয়।
সত্যাগ্রহ আন্দোলন বাংলাভাষী মানুষজন
মুখের ভাষার মর্যাদা চাই টগবগিয়ে উঠল মন।
চন্ডীচরণ সূত্রধর বীরেন্দ্রও ছাড়ল ঘর
শামিল হ’ল সবার সাথে শহিদ হ’য়ে আজ অমর।
হিতেশ এসে টানল রাশ ফেলছে তখন দীর্ঘ শ্বাস
দেখেও এমন একগুঁয়ে ভাব তবু ওরা নয় হতাশ।
শচীন্দ্র পাল দেয় সামাল হাওয়া লেগে ফুলছে পাল
‘হটবো নাকো আমরা পিছু হোকনা মাটি রক্তে লাল।’
সত্যেন্দ্র দেব সুনীল আর সুকোমল আজ দুর্নিবার
বুক চিতিয়ে এগোয় তাঁরা জানে না যে মানতে হার।
মিষ্টি মধুর মাতৃভাষা হৃদয় জুড়ায় বাংলাভাষা
ওই ভাষাতেই পড়ি লিখি সারাজীবন জোগায় আশা।
কুমুদ-কানাই-তরণি বড়ই ব্যাকুল ধরণি
ওদের কথা ভুলেই গেছে ও' নামে নেই সরণি।
আন্দোলনের অগ্নিশিখা আঁকল ভালে বিজয়টিকা
মানতে হ’ল ওদের দাবি চূর্ণ হ’ল অহমিকা।
মঙ্গলাও এক শহিদ অদম্য তাঁর ত্যাগের জিদ
এগিয়ে গেছে দিদির সাথে তাঁর চোখেও নেইকো নিদ।
সারাজীবন পঙ্গু হ’য়ে কী যন্ত্রণা গেছে সয়ে
তাঁরেও আজি স্মরণ করি প্রভাতবেলা সূর্যোদয়ে।
কৃষ্ণকান্ত আর বিজন ভাষার জন্য ব্যাকুল মন
অত্যাচারের শিকার ওরা ওদের করি আজ স্মরণ।
দুর্ভোগ চব্বিশ বছর অসম-পুলিশ তো বর্বর
নির্বিচারে ছুঁড়ল গুলি সইল না আর একটু তর।
মানসী দাস দিব্যেন্দু দূর আকাশে আজ ইন্দু
বাংলা ছাড়া চায়নি জীবন থাকতে রক্ত একবিন্দু।
আহতও হয়নি কম পঙ্গু তবু অটুট দম
শ্রদ্ধাভরে স্মরণ করি শহিদ যারা দোবোত্তম।
© অজিত কুমার কর