তুই আমাদের ছোট্টো মেয়ে


তুই আমাদের ছোট্টো মেয়ে সবার চেয়ে দড়
আজকে তোকে লাগছে যেন আমার চেয়েও বড়।
একা একা স্কুল-যেতে ভয়, সঙ্গে যেতে হতো
দস্যিপনার শেষ ছিল না পড়ছে মনে কতো।
একটা লাইন লেখা হলে মিলত আমার ছুটি
'এবার আসি', বললে যে তোর নড়ত কেবল ঝুঁটি।
পড়াতে মন বসত না তোর চঞ্চলতা অতি
খেলার মাঠে, দৌড়ে প্রথম দুরন্ত তোর গতি।


দিদি বা তোর-দাদার চেয়ে সাঁতার শেখা আগে
বছর পাঁচেক বয়স তখন ভাবলে অবাক লাগে।
ঘন্টাছয়েক ট্রেন-যাতায়াত ফিরতে হতো দেরি
আমার মতো হয়তো হতো কষ্ট অনেকেরই।
সকল কাজে হলেও দড় অংকে ভীষণ কাঁচা
তবুও আমি হাল ছাড়িনি স্বপ্নসুখেই বাঁচা।
আঁকা-লেখা-আবৃত্তি-গান চলত একই সাথে
ক্যারাটে-যোগ-নৃত্য-খেলা, পড়া কেবল রাতে।


শুনে শুনে মুখস্ত সব গল্প মজার ছড়া
গল্পগুলো প্রচলিত, কয়েকটা মনগড়া।
সবেমাত্র স্নাতক হলি, শেষ প্রহরে আমি
পাহাড়প্রমাণ ভাবনা আমার জানে অন্তর্যামী।
এগিয়ে এলো সেই শুভদিন গেলাম ফুলের হাটে
রজনী-জুঁই-রঙিন কাগজ সাজাতে রাত কাটে।
নভেম্বরের উনিশ সেদিন  হাজির সবাই এসে
আশীর্বাদের শুভলগ্ন সূর্য ওঠে হেসে।


আশীর্বাদের একটু পরে হস্তবন্ধন হলো
সিঁদুরদানের সময় হতেই চক্ষু ছলছলো।
সকালবেলার অনূঢ়াটি বধূ বিকেলবেলা
পূর্ণ গৃহ শূন্য হলো বিধাতার কী খেলা।
আনন্দনীড় বানাবি তুই এই ধরণীর বুকে
প্রার্থনা এই নতুন জীবন কাটুক পরম সুখে।
তুই আমাদের ছোট্ট মেয়ে সবার চেয়ে বড়
আজকে তোকে লাগছে যেন আমার চেয়েও বড়।


*অজিত কুমার কর