আমার একটা গাছ ছিল।
আমার দক্ষিণের জানলা বরাবর,
বেশ কিছু বাড়ি পেরিয়ে
দাঁড়িয়ে থাকত সে।
রোদ্দুরে ঝিলমিল করতো,
বৃষ্টিতে স্নান করতো, সবই দেখতাম।
সন্ধ্যার মুখে পাখির ঝাঁক আসতো।
দূর থেকে শুনতে পেতাম অস্পষ্ট কাকলি।
দেখতাম, ওদের বাসা ফেরার আনন্দে,
আমার গাছের খুশি ।


অনেক ছোট ছিলাম তখন।
স্কুল আর বাড়ি __এটুকুই ছিল গণ্ডি!
ইচ্ছে করলেও ওর কাছে যাবার
উপায় ছিল না।
তাছাড়া পৌঁছনোর পথটাও তো অজানা!


একদিন বাবার কাছে জানলাম,
ওটা বাক্স বাদামের গাছ।
বলার সাহস হলো না, দেখার ইচ্ছের কথা।
অনেক বানর লাফালাফি করতো ঐগাছে।
কখনো কখনো তারা আসতো
আমাদের বাগানে।
ওরা কি আসতো আমার গাছের খবর নিয়ে?


জানলার গা ঘেঁষে দাঁড়ানো
কাঠ মল্লিকার সুবাস নিতে নিতে
রাতে কখন ঘুমিয়ে যেতাম যেন।
স্বপ্নে দেখতাম
ও আমাকে ডাকছে।


একদিন আমার খুব জ্বর।
বন্ধ করা হলো দক্ষিণের জানলা।
বেশ কিছুদিন বাদে যখন খোলা হলো,
একটা বিরাট শূন্যতা গ্রাস করলো।
আমার গাছ আর নেই!!!
বাবাকে জিজ্ঞেস করে জানলাম,
ওখানে বহুতল উঠবে।


গলা বুজে এলো আমার।
মনে হলো, কেন জ্বর হলো আমার!
ও কি অভিমানে চলে গেল,
বন্ধ জানালা দেখে?
আমি যে সবুজ হারালাম!!!