এখনও অরণ্য  আছে।
শ্বাপদ - শঙ্কুল অরণ্য__এ রাজপথে।
দিল্লি থেকে কামদুনি
চলেছে শবের মিছিল।
নারীদের শব।
সভ্যতার টুঁটি টিপে ধরা
শ্বাপদের দল
ছিঁড়ে খুঁড়ে খেয়েছে তাদের।
পশুদের সমাজেও আছে দস্তুর।
ক্ষুধা ব্যতীত করেনা কেউ ভক্ষণ।
কিন্তু এ পশুরাজ্য নিয়মহীন।
নারীমাংস লোভী শ্বাপদ যত্রতত্র।
সৃষ্টিকর্তা মুখ ঢাকে বুঝি লজ্জায়,
এ কোন্ পুরুষ সৃষ্টি করেছে সে!
পৃথিবীর শ্রেষ্ঠ জীব মানুষ।
তার হাত ধরেই আজ সভ্যতা
আর নারী নিগ্রহের অধিকার পায় পুরুষ
এ সভ্যতায়!
কেন? কেন? কেন?
প্রতিবাদের ঝড় ওঠে__
উত্তর থেকে দক্ষিণে, পূর্ব থেকে পশ্চিমে।
প্রতিবাদের কোনো উত্তর নেই।
শুধু মোমবাতি - মিছিল নয়
আরও প্রতিবাদী হও নারী।
মোমবাতির মৃদু আলো
বিস্ফোরণের আলো হয়ে উঠুক
তোমার শিরা উপশিরায়।
শানিত কর তোমার মনন,
ক্ষুরধার কর তোমার তেজ।
তোমার নমনীয় কমনীয়তার
সুযোগ নিয়েছে যারা,
তারা আজও উদ্ধত।
আজও তারা দংশক কীট।
একইভাবে ঘটে চলেছে
সেই পাশবিক উন্মাদনা
সরীসৃপের দ্বিখণ্ডিত জিহ্বার
আস্ফালন।
তার বিষোদ্গারে সিক্ত পবিত্র মা।
শিশু - বালিকা - বৃদ্ধা
সবাই যেন তার বিকৃত ভোগ।
আজও অরণ্য আছে,
শ্বাপদ - শঙ্কুল অরণ্য এ সভ্যতায়।
তাই বয়স্ক - নারী ধর্ষণ ঘটে
রানাঘাটে এবং অন্যত্র।
আজও পুরুষ ভস্মীভূত হয়নি
অনুতাপের আগুনে।
আজও লজ্জায় মিশে যায়নি।
আজও শপথ করেনি,
করেনি কোনো অঙ্গীকার।
তাদের মুখ ভঙ্গিতে প্রকট যেন
এটাই প্রাপ্য নারীর।
নারী জাগো।
আদি শক্তির অংশ তুমি।
ধ্বংস কর
ভস্মীভূত কর তাদের বিকৃত কামনা।
ফিরিয়ে আনো তাদের
সভ্যতার আলোকে।
শুদ্ধ কর তাদের অন্তরকে।
নারী তুমি শ্রীময়ী
তুমি সহিষ্ণু তুমি ধৈর্যশীলা
তুমি ক্ষমাকারী।
তোমার এ রূপ দেখতে শিখুক পুরুষ।
নিজেকে শুদ্ধ করুক সেই পুরুষেরা।
তাদের কলুষ মনে জাগুক সহমর্মিতা।
চিনুক তাদের মাতাকে,
তাদের কন্যাকে, ভগিনীকে, স্ত্রীকে।
মাঠে ময়দানে, অলিতে গলিতে
লজ্জা যাদের ভূলুণ্ঠিত,
যে নারীর নান্দনিক সৌন্দর্য
আজ সস্তা সামগ্রী
সৃষ্টির বীজ তার মধ্যেই নিহিত।
পুরুষ শোন, সেই বীজেই তোমার জন্ম।
তাই এত অহংকার!
রাজসভায় বস্ত্র হারানো দ্রৌপদীর
পঞ্চ স্বামীও ছিল নির্বিকার।
আজও পুরুষ নির্বিকার।
সভ্যতার অগ্রগতি হয়নি এতটুকু।
মানুষ - পুরুষ এখনও সোচ্চার হয়নি
পশু - পুরুষের বিরুদ্ধে।
আজও অরণ্য আছে
শ্বাপদ - শঙ্কুল অরণ্য এ সভ্য রাজপথে।।