শুভা মারা গেছে।
সারারাত কেঁদেছে ওর মা শব ছুঁয়ে।
ষোলো বছর আগেও কেঁদেছিল
যখন এক উৎসবের রাতে_
রাতভোর ছিঁড়ে খেয়েছিল নরকীটগুলো
শুভার শরীর
নির্জন অন্ধকার মাঠে।
তারপর উচ্ছিষ্ট শরীরের উপর
জলন্ত সিগারেটের স্পর্শে
এঁকে দিয়েছিল একটা একটা করে
অসংখ্য ক্ষত চিহ্ন।
যত যন্ত্রণা শুভার
তত উল্লাস ওদের।
রাস্তায় তখন মহামায়ার আলোকিত
শোভাযাত্রা।
যন্ত্রণা বা উল্লাসের শব্দ চাপা পড়ে গেল
উৎসবের উন্মাদনায়।
শরীরে  যন্ত্রণা নিয়ে
কিশোরী শুভা বাড়ি ফিরেছিল ভোররাতে।
মুখ ফিরিয়েছিল স্বজনেরা।
''গলায় দড়ি জোটেনি তোর? ''
বলেছিল ওর মা।
তারপর কেঁদেছিল বুকে জড়িয়ে ধরে
বিদ্ধস্ত শরীরটাকে।
আজ মাটির দাওয়ায় শুয়ে আছে
শুভার দেহ
রোগভোগের যন্ত্রণার চিহ্ন নিয়ে।
পড়শিরা দেখে গেছে একে একে
উৎসাহ অথবা সমব্যাথায়।
শুধু আসেনি সে
যে সিঁদুর দানের বদলে
শুষে নিয়েছিল শুভার শরীর মন।
বড় সাধ ছিল ঘর বাঁধার।
কালান্তক ব্যাধি কবে থেকে যেন
বাসা বেঁধেছিল ছিবড়ের মত শরীরে।
শুভা মারা গেল।
স্বামী পরিত্যক্তা, ধর্ষিতা শুভা
মারা গেল।
সেই নরপশুগুলো
কারো স্বামী কারো পিতা
হয়ত সমাজের মাথা
যারা ধর্ষকদের শাস্তি চায়,
শুভারা মারা গেলে 'আহা উহু' করে,
সৎকারের পয়সা দেয় গরীব মাকে,_
তোমরা শোনো_
শুভা মারা গেছে,
শুভারা মারা যায়।।        


*নাম পরিবর্তন করে একটি সত্য ঘটনা অবলম্বনে রচিত।