আজ রাজপথে এক প্রজাপতির করুণ মৃত্যুর সাক্ষী হলাম,
অধিকার আদায়ে সরব হয়েছিল,
চেয়েছিল এই শহরে প্রাণ খুলে উড়ে বেড়াবার অধিকার,
হাজার রঙে রাঙিয়ে দিতে চেয়েছিল সারা শহর,
মিথ্যে করে দিতে চেয়েছিল রাজ্যের গায়ে লেগে থাকা যত অপবাদ!


অধিকারের প্লেকার্ড গলায় ঝুলিয়ে হাজির হয়েছিল রাজ-দরবারে,
মুখোশ পড়া অমানুষে সয়লাব রাজ-দরবার, কেউ মন্ত্রী তো কেউ উজির!
সভাকক্ষে জোর গলায় পড়ে গেল নিজের দাবিপত্র,
বলল এই দাবি শুধু আমার নয়, এই দাবি এই রাজ্যের, এই শহরের,
এই জনপদের প্রতিটি রাস্তা, ঘাট, মাঠ, প্রান্তর, অলি গলি, ইট পাথরের!


এমন দাবির মুখে ভীষণ চিন্তাগ্রস্ত রাজা, সাথে উজির, মন্ত্রী, সেনা, রাজবৈদ্য।
আমিও চিন্তিত! আমি সেই রাজ্যের রাজকবি!
সকলে আশ্বাস দিলাম, অচিরেই ফিরিয়ে আনা হবে শহরের হারানো যৌবন!
যেখানে পাখিরা গান গাইবে, প্রজাপতি ডানা মেলে উড়বে সারা শহর জুড়ে!
মানুষ নিশ্চিন্তে ঘুমোবে, বেড়াবে; চারিদিকে থাকবে শুধু সুখ আর সুখ!


রাজার আশ্বাসে প্রজাপতির মনে ফাগুন লাগে। মহা আনন্দে প্রস্থান করে।


প্রজাপতির প্রস্থান মাত্র সভাকক্ষে যেন হাসির বন্যা বয়ে গেল,
যে শহরে মানুষের অধিকার নেই সে শহরে প্রজাপতির অধিকার!
রাজার হুংকারে তীরন্দাজের নিশানা স্থির হলো সেই প্রজাপতির বক্ষে,
মুহূর্তেই রাজপথে লুটিয়ে পড়ল প্রজাপতি!


হাজার প্রজাপতি দূর থেকে দেখল প্রতিবাদের করুণ মৃত্যু!
আমি রাজকবি পেলাম কবিতা লেখার নতুন ক্ষেত্র!
এভাবেই একদিন এক এক করে মৃত্যু হবে সকল প্রজাপতির।
এরপর এ শহরে আর কোনো প্রাণ অবশিষ্ট থাকবে না।
আর কোনো পাখি গান গাইবে না।
কারো মৃত্যুতে কেউ শোক করবে না।
এ শহরে থাকবে শুধু ইট, পাথর আর কিছু ঘৃণ্য কীট, যাদের আমরা মানুষ বলি।