সেদিন আমার মন প্রশ্ন শুধলো- ভালোবাসা তুমি কী?


ভালোবাসা উত্তরে বলল-
আমি,
এক প্রেমিকের কাছে ঝকঝকে পূর্ণিমা রাতে এক ফালি চাঁদের আলো;
আমার আলোয় সে পান করে প্রেম সঞ্জীবনী।


আমি,
এক পথিকের কাছে দুর্গম স্থলে অজানা রহস্যের বদ্ধ দুয়ার;
যে দ্বার খুলে তার অনুসন্ধিৎসু মন মেটাতে চায় জ্ঞান পিপাসা।


আমি,
এক মায়ের কাছে সন্তানের মুখের অবারিত অনাবিল হাসি;
সে হাসিমুখ দেখে মা ভুলে যায় যত কষ্ট-গ্লানি।


আমি,
এক যুবকের কাছে বুক ভরা সাহস আর হৃদয়ে দেশপ্রেম,
সে প্রেমই তো দিয়েছে দেশকে মায়ের স্থান।


হ্যাঁ, আমি সেই ভালোবাসা।


ভালোবাসা আরো বলল,
আমায় যদি খুঁজে পেতে চাও, তবে-
দেখে এসো কৃষকের গোলা ভরা, ঘামে ভেজা চাল,
দেখে এসো একবার জেলেদের মাছে ঢাকা জাল,
দেখে এসো পতাকার মাঝখানে সূর্যটি রক্তে লাল;
আমাকে পাবে তুমি যখন ছোট্ট মেয়ে ঘুমোয় বাবার কোলে,
আমাকে পাবে তুমি বিদায়ের দিনে শিক্ষকের অশ্রুজলে।
মায়ে আদরে বাবার শাসনে বেড়ে ওঠা দিনে পাবে আমায়,
বোনের স্নেহে ভাইয়ের পাগলামীতে খুঁজো আমায়।
যদি কখনো পড়ো প্রিয়তমার চিঠি, সেখানেও পাবে আমাকে,
শঙ্খ-শালিক বটের ডালে কিংবা পাবে হংস-মিথুনে গাঙের বাঁকে,
প্রিয়তমের প্রতীক্ষায় থাকা স্ত্রীর বসনেই যে আমার বসবাস;
আমারই পরশে চলে কাঁটাতারের পাশে অতন্দ্রপ্রহরীর নিঃশ্বাস।
হ্যাঁ, আমিই সে ভালোবাসা,
আমিই সে মাধবীলতা,
হ্যাঁ, আমিই সে হাসনুহেনা ফুলের সৌরভ,
আমিই সে ললনার মিষ্টি প্রতীক্ষা, সৈনিকের পদতল,
হাসি, কান্না, আবেগ।
হ্যাঁ, আমিই সে ভালোবাসা।