হাতে হাত রেখে যে মানুষটা তোমাকে দুহাতে বাহু বন্দী করে জ্যোৎস্না স্নান করতো রোজ পূর্ণিমায়, তার অকস্মাৎ বদলে যাওয়া দেখে তাকে ভুল বুঝো না।
যে মানুষটা রোজ রাতে কপালে চুমু খেয়ে বলতো ভালোবাসি,
সে যদি হঠাৎ চুমু খাওয়া বন্ধ করে সিগারেটের ধোঁয়া ওড়ায় রাত বিরেতে তবে তাকে ভুল বুঝো না।
অফিসের শত ব্যস্ততার মাঝেও যে প্রিয় মানুষটা ফোন করে দুপুরে খেয়েছো কি না জিজ্ঞেস করতো সে যদি হুট করে কল দেওয়া বন্ধ করে দেয় তবে তাকে ভুল বুঝো না।
শরীরের তুমুল জ্বর নিয়ে যে লোকটা প্রহর ব্যাপী শুধু তোমার নামে প্রলাপ বকতো, তোমার প্রতি তার হঠাৎ অনিহায় তাকে ভুল বুঝো না।
থিয়েটারে কোনো হরর মুভি দেখে ভয় পাওয়ার বাহানায় যে তোমাকে বারবার জড়িয়ে ধরতো কিংবা সদ্য স্নাতা তোমার পিছনে চুপিচুপি এসে উন্মাদ শরীরের ঘ্রাণে উদ্ভ্রান্ত হতো, আদরে সোহাগে ভালোবাসায় রাঙ্গাতো তোমার অধর তার হঠাৎ বদলে যাওয়ায় তাকে ভুল বুঝো না।
আমরা মানুষরা খুব বেশি ভুল বুঝতে শিখি কিন্তু মানুষটাকে বুঝতে শিখি না।
তার চাওয়া পাওয়া, তার যত পছন্দ অপছন্দ, কিসে তার খুশি বেদনা আনন্দ লুকিয়ে থাকে সেসব খুঁজে দেখার চেষ্টা করি না। শুধু দোষারোপ করি।
আমাদের ছোট ছোট ভুলগুলো, অবহেলা গুলো দিনকে দিন বড় হতে হতে ভুলের পাহাড় হয়ে ওঠে। একটা সময় গিয়ে আমরা বুঝতে পারি প্রিয় মানুষটা আর আমার নেই। তখন খুব অদ্ভুত কারণে আমরা তার দোষগুলো বিষ ফোঁড়ার খুঁটিয়ে খুঁটিয়ে মারণব্যধিতে পরিণত করে ফেলি। ভুলে যায় নিজের করা শতকোটি ভুল!
আমরা কেন যেন নিজের করা ভুল গুলো শুধরে নেওয়ার বিন্দুমাত্র প্রয়াস করিনা। অথচ প্রিয় মানুষটার মনের গভীরে যে আক্ষেপ লুকিয়ে আছে তাতে খুব অল্প পরিমাণ ভালোবাসার প্রলেপ লাগাতে পারলেই জীবনটা স্বর্গীয় হয়ে উঠতে পারে।
আমরা সবাই কেন যেন ভুল বোঝার রথী-মহারথী ওস্তাদ-পণ্ডিত হয়ে উঠছি। ভালোবাসার সওদাগর এখন বুঝি জাদুঘরে কিংবা রূপকথার গল্পতেই দেখতে পাওয়া যায়।
নিজের সম্পর্ককে টিকিয়ে রাখতে হলে প্রিয় মানুষটার পাশে থাকতে হয়। ভুল বুঝে নয় বরং ভুল খুঁজে নিজের ভালোবাসার প্রাণ প্রতিষ্ঠা করতে হয়।