সনেট ১৮৮, করোনা – ৩
লিখেছি যা এতোদিন; একটিও তার ঠিক কবিতা হলোনা,
বদলায় পটভূমি,- শুরু করি বার বার নতুন অধ্যায়,-
নিরাশ্রিত শব্দগুলো – রয়ে যায় অলিখিত প্রথম পাতায়,
কত কত লোকালয় ভুলে গেছি যেতে যেতে হিসেব মেলেনা।
বন্ধু, ইদানিং যেন; ঘুমটাকে মনে হয়- খুব চেনা চেনা,
আঁধারের খুনি এক রোজ রাতে ক্ষমা করে কী যেন মায়ায়,-
ফিরে পাওয়া সময়ের করি রোজ অপচয়, শুধু অপচয়!
তথাগত দিনগুলি - মিশে যায় জনস্রোতে, নিশানা রাখেনা।


যখন- একলা কাটে একাকী আমার সাথে বিনিদ্র প্রহর;
বিধাতার মতো এই জন্মকে বাতিল বলে করি প্রত্যাখ্যান!
আবার ঝিমিয়ে পড়ি, পতিত ডোবার মতো নীরব, নিথর।
আঙ্গুলের ছোঁয়া লেগে সরসীর শান্ত জলে যদি আসে প্রাণ;
‌সেখা‌নে একটু ঢেউ উঠ‌লো কি উঠ‌লো না কে রা‌খে খবর!
যেন মিলিয়ে গেলাম, বিলিয়ে গেলাম যতো প্রেম অকারণ!


সনেট ১৮৯, করোনা – ৪
যেন মিলিয়ে গেলাম, বিলিয়ে গেলাম যতো প্রেম অকারণ!
সে অকারণ-ই বটে, মনে পড়ে তোর সাথে দুপুর রাস্তায়,-
অকারণ থেমে যাওয়া, অকারণ বানে ভাসা পড়ন্ত বেলায়,
হৃদয় গহিনে ডুবে শুনেছি- ও উপেক্ষার তীব্র উচ্চারণ।
জুয়া খেলে গেছি এই ললাটের রেখা নিয়ে, শ্যেনের মতোন-
বোশেখের কালো ঝড় ফাঁকি দিয়ে উড়ে গেছি আকাশ সীমায়,
সবুজের মিঠে ঘ্রাণ উবে গেছে রৌদ্রদগ্ধ হলুদ ডানায়,
তুষারধবন এই বুকের উঠোনে শুধু পারদ পতন!


দেখা হলে তার সাথে, বলে দিস এই আমি- নেই আমি আর,
(মুখে মুখ ঢেকে রাখা মুখসাজে আঁকা বাঁকা কত কারুকাজ!
ভুল করে ভালোবাসা, ভুল করে জলে ভাসা, ভুল প্রতিবার।)
যে আমিটা এসেছিল বসন্তের শিরোনামে… বেখবর আজ!
কবেকার ঝাড়বাতি পুরনো হয়েছে আজ - রিক্ত দরবার,
মাটির অজান্তে কতো কুহেলিকা ঝরে গেছে - থেকে যাবে রাজ।


শব্দ ব্যাখ্যাঃ
তুষারধবন > তুষারাবৃত
শ্যেন > বাজপাখি/চিল


এটি সনেট পরম্পরা বা Sonnet Sequence ধারার কবিতা যেটি ১৫টি সনেটের গুচ্ছ।(Lot)। সনেটগুলি লেখা হয়েছে সনেট করোনা (Sonnet Corona) বা ক্রাউন অব সনেট (Crown of Sonnets) রীতিতে।