দাদুর কথা


দাদু ছিলেন ব্যাংক অফিসার এখন রিটায়ার
এমনিতে তার শান্ত শিষ্ট মিস্ট ব্যবহার
কিন্তু বুড়োর মাথার ব্যামো,রাগলে হিতাহিত
জ্ঞান থাকে না,প্রকাশ করেন যা ভাবেন উচিত।
কান ফাটানো চিৎকারে তার হার মেনে যায় ষণ্ড
বিস্ফারিত অক্ষিগোলক রক্তিম হয় গন্ড,
টাক মাথাতে পক্ব কেশের যা কিছু অবশিষ্ট
দু হাত দিয়ে ছিন্ন করেন, পায়ের তলায় পিষ্ট ।
হাতের নাগাল যা কিছু পায় ছুঁড়তে থাকেন রাগে
ভাবটা এমন চিবিয়ে খাবেন পান যদি তা বাগে।
কিন্তু দাদুর মনটা নরম হোকনা গরম মাথা
সর্ব জনের সকল কষ্ট সকল দুখে ব্যথা
মানেন তিনি নিজের মতন, সর্ব জীবে মায়া
কাক কুকুরে দেখেন তিনি পরমপিতার ছায়া।
সংসারের ই সকল কাজে প্রসারিত হস্ত,
অভ্যাগতের আপ্যায়নে সাহায্য তার মস্ত।
যতই তাকে রুক্ষ ভাবো কিংবা খড়ুষ বৃদ্ধ
কিন্তু তিনি ভদ্র নিপাট জ্ঞান গরিমায় ঋদ্ধ।


দিদার কথা


এ সব কিন্তু আমার কথা দিদা বলেন ভিন্ন
তাহার নাকি সারা জীবন কন্টকে আকীর্ণ !
দাদু টা ও এমনি পাজি সর্বদা খুনসুটি
হোক না ভারী শরীর টা তার তা বলে কি " মুটি "?
তেনার নাকি মৃত মার্জার চলন টা আদুরী
গ্রামার মতে ভার্যা দাদুর ,  তাই তিনি "দাদুরী" !!
এমন তরো শুনলে কথা রাগ ধরে না কার ?
তাই তো প্রকাশ কাশী বাসের ইচ্ছে বারংবার।
দাদুর দোষ কি খুঁজে বেড়ান ঠাম্মা সারাক্ষণ ,
পানের থেকে চুন খসলেই করেন আক্রমন।
ক্ল্যাশিক্যাল ও পুরাতনী বাংলা রাগের গানে
আশক্তিটার বাড়াবাড়ি দিদুন নাহি মানে।
কিংবা দাদুর অনাগ্রহ টিভির সিরিয়ালে
ঠাম্মা দেখান বহিঃপ্রকাশ আবদ্ধ চোয়ালে।
দাদু যখন ভালো বাসেন কবিতা প্রবন্ধ
গল্প কিংবা উপন্যাসে ঠাম্মা আবার অন্ধ !!
কম্প্যুটারে বসতে গিয়ে ঝগড়া তাদের নিত্যি
শেয়ারে ধ্যান দাদুর যখন , দিদার জ্বলে পিত্তি।
দিদার যত আশক্তি ওই ক্যান্ডিক্রাশের মেঝে
শেলোফোনের হোয়াটসাপে ফেশবুক টার পেজে।
দাদু করেন স্যাক্রিফাইস ঝগড়াতে দেন যতি ।
ভাবেন বুঝি এমনি হলে ফিরবে দিদার মতি।।


আমার কথা


এমনি ভাবে বৃদ্ধাবাসে বিষাদ পুষে বুকে
নিজের মতন বাঁচার আশায় বাঁচেন মনের দুঃখে
নিজের মতন ঝগড়া করেন যেমন অজাযুদ্ধ
লঘুক্রিয়া বহ্বারম্ভে ! প্রেমটা তাদের শুদ্ধ।
আমি তাদের চোখের তারা, আমি তাদের প্রিয়া
আমি তাদের হলুদ পাখি আমি ই অরেলিয়া।
আমি এখন ছোট্ট শিশু করার কি বা আছে,
কেবল ভাবি বড়ো হয়ে ভুল করি না পাছে।
তাহাদের ও সাধ রয়েছে নাতনী নাতি সাথে
সুখের জীবন ভাগ করে নেয়,শান্তিতে ঘুম রাতে।
যাদের কেবল কাটল জীবন সন্ততি চিন্তায়
বেলা শেষের দিন গুলোতে স্বস্তি যেন পায়।