এক গাঁয়ে এক বুড়ি ছিলো ,
এক কালে তার পয়সা ছিলো , বুড়ো তখন বেঁচে ।
আদর ছিল , যত্ন ছিল ,জোয়ান বেকার ছেলেরা সব
বুড়ো-বুড়ির করত সেবা আপনা থেকেই যেঁচে ।


একদিন কী অসুখ হ’ল ,
বুড়োর নটে গাছ মুড়োলো ;
বুড়ি শোকে তখন থেকে শুতো মাদুর পেতে ।
ছেলেরা ও টের পেয়েছে ,
যা ছিল তো সব গিয়েছে
বুড়োর চিকিচ্ছেতে ।
বুড়ির হাতে নেই যে টাকা ,
লক্ষীর ভাঁড় শূন্য –ফাঁকা !
ছেলেরা তাই কাছ ঘেঁষেনা
খাওয়ার সময় আর ডাকে না
তেমনটি পাত পেতে ।
ভাবলো বুড়ি কি করা যায়
বার করলো একটা উপায়—
টাকার মোহ না দেখালে দেবেনা কেউ খেতে ।


একটা থলি ভরলো বুড়ি
কেবল দিয়ে পাথর নুড়ি
মেছুনিরা বাজিয়ে চুড়ি
দেমাক যেমন দেখায় কেমন পয়সা কতই আছে ।
তেমনি বুড়ি বাজায় নুড়ি
পয়সা গোনার মতন করি'
যখন দেখে ছেলেরা সব রয়েছে ধারে কাছে ।
ঝুন ঝুনা ঝুন বাজলে নুড়ি
ছেলের লাগে কি সুড়সুড়ি !!
ভাবে মায়ের থলিতে ঐ
কতই না ধন তাতে !


মায়ের সেবা গেলই বেড়ে
তোয়াজ ক’রে বিছানা ঝেড়ে—
খাওয়ার পরে পানটি ছেঁচে— !!!
থাকবে তো আর দু-দিন বেঁচে
এর পরে তো সব টাকাটা আসবে মোদের হাতে !!
এমনি করেই বেশ কিছু দিন
ভড়কি দিয়ে বুড়ি
সুখ কুড়োনোর নাটক শেষে
চলে গেলো ঘুমের দেশে ।
থলি খুলে ছেলেরা সব
দেখলো কেবল নুড়ি ।


ছেলেদের তো হাতটা মাথায়
কাতর হোল ভীষন ব্যথায়
ইনভেস্টটা বৃথাই গেল এমন আগা গোড়া
বুদ্ধি বটে ! মানতে হবে বুড়ির সোনায় মোড়া ।।