কোথায় যায় রাতের বেলুন?
গ্যাসবাতির মতো ফাঁপা, তেলের শিশিতে জমা শীতের শ্বাস
এ শহরের শিশুরা—তাদের ঘুম আসে না।
একটি গর্তমুখী রোদচশমা টানে,
ময়লার পাহাড়ে নক্ষত্র খোঁজা তাদের খেলা।

দিনের বুকে, জেগে ওঠে এক ভাঙা খেলনাঘর
জীবনের ভিতর খুঁজে পায় না সন্তর্পণে চুরি করা জোনাকি।
হাতে লেগে থাকা সস্তা রঙের ঘ্রাণ ভাসিয়ে নেয় নদীর পারে।
তাদের কোনো নদী নেই, আছে মরা ধুলোয় জমে থাকা কালো জ্বর।

তাদের কান্না জমে থাকে কাচভাঙা চাঁদে,
একটি পলিথিনের বৃষ্টিতে ভিজে থাকা সূর্য
যেন জাগিয়ে তোলে সহস্র প্রশ্ন—
“আমাদের আকাশ কোথায়? আমাদের মাটি কই?”
কোনো উত্তর নেই, শুধু পাতাহীন গাছের নিচে ছায়াহীন চিহ্ন।

তারা ছুটে চলে—ভাঙা জুতোর ভিতর বৃষ্টির শব্দ
তাদের সাথে থাকে খাদের কিনারায় দুলতে থাকা বাতাস।
তারা চোখ মেলে চায়, পোড়া শালপাতার মতো ধূসর স্বপ্ন
তাদের ত্বকের ভাঁজে জমে থাকে জানালার বাইরে ঝুলে থাকা ধোঁয়ার গন্ধ।

তবু, জীবনের ভিতর একটি রাস্তায় রেখে আসা পায়ের ছাপ
তাদের স্বপ্নে জাগায় আলুর খোসায় আঁকা দূরন্ত কবিতা।
তারা খুঁজে ফেরে ভাতের ফাঁকা থালায় জেগে থাকা পূর্ণিমা।
তাদের জীবন এক অন্ধকারে বাঁধা আলোকরেখা,
যেখানে চিমনির ভাঁজে শুয়ে থাকে সূর্যের হিম শ্বাস।

শেষ রাতে, ফুটপাথের নিচে জমা রুপোর জল
তাদের ডাকে, ঝুলন্ত কুয়াশার কাঁপন বলে,
“তোমাদের জীবন ছুঁতে পারে না কেউ,
তোমরা জলজ মেঘের সন্তান।
তোমাদের ক্ষত থেকে জন্ম নেয় নতুন সকাল।”