ফাগুনের রঙে ঝলমলে দিন এখন কালো দাবদাহে,
হৃদয় কাঁপে তীব্র বেদনায় অশান্তির আগুনে।

প্রিয় শুভঙ্কর, আকাশটা গলিত সীসার মতো ঝলসাচ্ছে,
ঢাকার রাস্তা গলিত লোহার নদী।
ঘামে আমার শাড়িটা আটকা পড়েছে,
শরীরটা যেন জ্বালাময় মশাল।

কিন্তু এই দাবদাহের চেয়েও জ্বালা করে
তোমার জন্য আমার হৃদয়।

এই শহরের ধ্বংসাবশেষের মধ্যে,
মনে হয় যেন কোনো রাজকীয় প্রাসাদ ধ্বসে গেছে।
আর আমি, সেই প্রাসাদের শেষ রক্ষাকর্তা,
হাতে তলোয়ার নিয়ে দাঁড়িয়ে আছি।

কিন্তু আমার শত্রু কে?
এই অসহ্য গরম? না, এই নিঃসঙ্গ রাত?
না, শুভঙ্কর, আমার একমাত্র শত্রু হলো তোমার অনুপস্থিতি।

তোমাকে আমি কীভাবে বর্ণনা করব?
তুমি কি সেই সূর্য, যার ঔজ্জ্বল্যে আমার চোখ অন্ধ হয়ে যায়?
না, তুমি সেই চাঁদ, যার শীতল আলো আমার ত্বকে স্পর্শ করে
ক্ষীরসাগরে স্নান করার মতো অনুভূতি দেয়।

তুমি যেন মৃদু বাতাস, যে আমার ঘাম মুছে দেয়।
কিন্তু না, তুমি ঝড়, যে আমাকে বুকে জড়িয়ে ধরে।

আমাদের প্রেম ঐ মধ্যযুগীয় রোমান্সের মতো,
যেখানে রাজকুমারী দুর্গের সর্বোচ্চ শিখরে বন্দী থাকে,
আর রাজপুত্র অগ্নিঝড়ের মধ্যে দিয়ে লড়াই করে তাকে উদ্ধার করতে যায়।

আমি সেই রাজকুমারী, এই দাবদাহের দুর্গে আটকা পড়ে আছি।
আর তুমি, আমার রাজপুত্র, কোথায়?

এই চরম অস্বস্তিতেও, তোমার কথা মনে হলেই আমার শরীর জ্বলে ওঠে।
তোমার স্পর্শের স্মৃতি আমাকে আচ্ছন্ন করে।
আমি চাই তোমাকে জড়িয়ে ধরতে, তোমার ঠোঁটে ঠোঁট লাগিয়ে
এই অগ্নি নিভিয়ে ফেলতে।

জানি, এই চিঠি পড়ার সময় হয়তো তোমার কাছেও ঠিক এমনি লাগছে।
তুমিও হয়তো আমার জন্য অস্থির।
শুভঙ্কর, এই দাবদাহ কেবল বাইরে নেই, আমাদের অন্তরেও।
কিন্তু মনে রেখো, এই আগুনই আমাদের প্রেমকে আরও জ্বালাবে।

শীঘ্রই ফিরো, আমার রাজপুত্র।
তোমার অপেক্ষায়, তোমার পারমিতা।

প্রেমে পুড়ে ছাই হবো, জানি,
তবুও তোমারই জন্য হৃদয় উন্মুখ থাকি।