আমরা বুঝতে পারিনি আমাদের কবে সর্বনাশ হয়ে গেছে।


এখনও নদী বয়ে যায়, ঢেউ খেলে ঈশান কোণে,
কিন্তু মাছরা আর নেই, শুধু পলিথিনের মৃতদেহ ভাসে।
কাঁঠালগন্ধে ভরা বাতাস এখন বিষাক্ত ধোঁয়ায় ডুবে আছে,
আমরা নিশ্বাস নিয়ে নিজেদের মৃত্যুকে আমন্ত্রণ জানাই।


রাস্তায় দৌড়োয় না আর ছেলেমেয়েরা,
হাতে তাদের বৃদ্ধির গতি থামানোর ডিজিটাল চাবি।
আকাশ আর নীল নেই, একটি বিশাল এলসিডি স্ক্রিন,
যেখানে বিজ্ঞাপন ছাড়া আর কিছু দেখা যায় না,
এমনকি সূর্যও।


শহরের চারপাশে গজিয়ে উঠেছে কংক্রিটের জঙ্গল,
গাছগুলো নির্বাসিত, পাখিরা হারিয়ে গেছে কোন অজানা ঠিকানায়।
আমরা থাকি বাতানুকূল ঘরে, তাপ নিয়ন্ত্রণে,
কিন্তু বাইরের দুনিয়া যে জ্বলছে, তা আমাদের জানা নেই।


শব্দ দূষিত হয়েছে, ভাষা হয়েছে বিলুপ্ত প্রজাতি,
আমরা আর কাউকে ভালোবাসি না, শুধু ইমোজির মাধ্যমে আবেগ প্রকাশ করি।
সম্পর্কগুলো অ্যাপের মধ্যে সীমাবদ্ধ,
স্পর্শ হয়েছে একটি বিস্মৃত স্মৃতি।


এই বিলুপ্তির নীল জলে আমরা সাঁতার কেটে চলেছি,
মনে করছি এটাই স্বাভাবিক, এটাই জীবন।
কিন্তু মাঝে মাঝে, কোনো অচেনা দুঃখ গলা টিপে দেয়,
একটি স্বপ্নের মতো মনে হয়, যেখানে গাছ ছিল, পাখি ছিল,
মানুষেরা একে অপরের চোখে চোখ রেখে কথা বলত।


কিন্তু সে স্বপ্ন আর ফিরে আসবে না,
আমরা সব কিছু ধ্বংস করে ফেলেছি,
এখন শুধু এই নীরব, নিশ্বাসহীন জলের মধ্যে থাকতে পারি।


এই হল আমাদের শেষ নিশ্বাস, আমাদের চূড়ান্ত বিলুপ্তি।