প্রেমের দুঃসাহসে, মাছের বুক থেকে পাথর ঝরে।
নদীর জল, সমুদ্রের জল, পাথর, পাথর, লাল পাথর নীল হয়ে যায়, নীল পাথর লাল।
জীবন যখন সত্যিকারের চেষ্টা করে, তখনই...

কিন্তু আগে অভিরূপের কথা শুনুন। সে থাকতো লালবাগের গলির মাঝে, আর স্নিগ্ধা, সেই চতুর্থ তলার বারান্দায়। দুজনের মাঝে অগণিত গল্পের সিঁড়ি, কিন্তু একটাও ধাপ বোঝা যায় না। অভিরূপ কাঠের খেলনা বানায়, আর স্নিগ্ধা বই পড়ে।

একদিন, একটা ঘুড়ির সুতো স্নিগ্ধার বারান্দায় ঝুলে গেল। অভিরূপ উঠে গেল, ঠিক যেমনটা লালবাগের ছেলেরা সবসময় করে। কিন্তু স্নিগ্ধা অবাক হয়ে গেল, কারণ সে তো কখনো অভিরূপের চোখের দিকে তাকায়নি।

সেইদিন থেকে, লালবাগের গলি আর চতুর্থ তলার বারান্দার মাঝে গল্পের সিঁড়িগুলি একটু একটু করে স্পষ্ট হতে লাগল।

একদিন, ঝড়ের রাতে, বৃষ্টির ঝাপটায় লালবাগের গলি ভেসে গেল। স্নিগ্ধার বারান্দার রেলিং ধরে অভিরূপ দাঁড়িয়েছিল। তার হাতে ছিল একটা নৌকা, লাল কাঠের, ভেতরে একটা চিঠি।

চিঠিতে লেখা ছিল, "আমার প্রেমের নৌকা, ঝড়ের জলে ভাসিয়ে দিও। যদি কোনোদিন নদীতে পৌঁছায়, তাহলে জেনো, তোমার পাথরের বুক থেকেও পাথর ঝরে পড়েছে।"

সেই রাতেই, স্নিগ্ধা নৌকাটিকে ঝড়ের জলে ভাসিয়ে দিল। পরদিন সকালে, নদীর ধারে, লাল কাঠের নৌকাটা পড়ে আছে। তার ভেতরে, একটা নীল পাথর।

অভিরূপ নেই, লালবাগের গলি নেই।

কিন্তু স্নিগ্ধার বুক থেকেও পাথর ঝরে পড়েছে। নদীর জল, সমুদ্রের জল, লাল পাথর নীল হয়ে গেছে।

প্রেমের দুঃসাহসে, মাছের বুক থেকে পাথর ঝরে।
জীবন যখন সত্যিকারের চেষ্টা করে, তখনই...

সেই পাথর নীল হয়ে যায়।
কিন্তু, প্রতিফলন থাকে, লাল।