ভাষা, এক নিশ্বাসে বিশ্বজনীন, অন্য নিশ্বাসে মা তার,
এক দিকে বর্ণালির তান, অন্য দিকে শহিদের অভিশাপের হাহাকার।


মায়ের কোলে আদরে বেড়ে ওঠা শিশু, কখন হয় বীর, কখন শহিদ, জানে না কেউ।


ফেব্রুয়ারির রক্তিম আকাশে


ঝরে পড়ে অক্ষরের ফুল, অসমাপ্ত শব্দের ভূত।
রবীন্দ্রের কলমের সঙ্গীত তাদের কানে যায় না,
বজলুর গর্জন গোপন মন্ত্র হয়ে যায়।


শুধু শোনা যায় অসমাপ্ত স্বাধীনতার চিৎকার,
অসমাপ্ত ভাষার আর্তনাদ।


আমি ঘুরে বেড়াই এই ভাষার


পুরাণকথার নগরীতে, স্মৃতির ধ্বংসাবশেষের মধ্যে।
দেখি কবিদের ভাঙা স্বপ্ন, রাজনীতিবিদের ফাঁকা প্রতিশ্রুতি,
আর সাধারণ মানুষের অক্ষরে অক্ষরে কষ্ট।


কোথা সে স্বপ্নের রাজ্য


যেখানে ভাষা ছিল মুক্তি, আর অক্ষর ছিল অস্ত্র?


এখানে শুধু অচেনা ভাষার দানব


তার ধ্বনি গ্রাস করে স্বপ্ন, গ্রাস করে ভবিষ্যৎ।
আমরা, হতবাক দর্শক, শুধু দেখি লিপির রূপান্তর,
হারিয়ে যায় মূল।


কোন চিত্রকর এঁকে দিতে পারে না


এই বিষাদের ছবি, কোন কবি লিখতে পারে না
এই হাহাকারের কবিতা।


কিন্তু এখনো বাতাসে ভাসে শহিদের শেষ নিশ্বাস


অসমাপ্ত শব্দের আঁচ।
মনে পড়ে সেই স্লোগান - "ভাষা নেই, রাষ্ট্র নেই..."


ভাষা আছে, রাষ্ট্র আছে,
কিন্তু অসমাপ্ত শব্দের ভূত ঘুরে বেড়ায়।


কখন থামবে এই ভূতের কান্না?
কখন শোনা যাবে পূর্ণ স্বাধীনতার গান?


এই প্রশ্নের উত্তর জানে না কেউ,
শুধু জানে ভাষার প্রতি ভালোবাসা
এই ভূতের মুক্তির একমাত্র উপায়।