গ্রীষ্ম বর্ষা হেমন্ত চলে গেলো
তোমার সাথে আর দেখা হলোনা।
গ্রীষ্মের ভ্যাপসা গরমে,
কোন একদিন ভার্সিটির ক্লাস শেষে
এই যে চলে গেলে, আর ফিরে এলেনা।
এখনও আমি প্রহর গুনি
বর্ষা শেষে এই বুঝি তুমি ফিরবে।
এখনও দোকানের কদম ফুল গুলো আমাকে
ভীষণ ভাবে টানে,
মনে পরে যায় একথোকা কদম পেলে
তুমি কি পরিমাণ খুশি হতে।
বর্ষণ মুখরিত দিনে শ্রাবনের বারি ধারায় কাক ভেজা হয়ে কিযে মজা করতে।


জানো, এখনো আমি হোস্টেলের সেই আগের রুমটাতেই থাকি।
এখনো তোমার কথা ভেবে মন ভারী হলে,
চোখের কোনায় ভরে ওঠা নোনা জল মুছে,
বেলকনির সামনে এসে শুধু তোমাকেই খুঁজি।
তুমি নরম ঘাসের উপর পা বুলাতে পছন্দ করতে,
মনে হলে নরম ঘাস গুলোকে এখনও আমি ছুঁয়ে দেখি।
শরতের আগমনী বার্তায় যখন নীল আকাশে সাদামেঘের লুকোচুরি খেলা,
চারিদিকে শুভ্র কাশফুলের সমারোহ।
দুর্গোৎসবে বাজছে ঢাক ঢোল কাসর
তখনও ভেবেছি নীলাম্বরী সাজে শিউলি মালা হাতে
এই বুঝি তুমি এলে।


তারপর যথারীতি হেমন্তও চলে গেলো।
তুমি এলে না।
শীত এলো চারিদিকে সব কিছু ধোঁয়াটে,
জরাজীর্ণ জন জীবন কনকনে শীতের দাপট,
কয়েকদিন পরে পরে টানা শৈত্য প্রবাহ,
তবুও রোজ আমি  উঁকি দেই ক্যাম্পাসে,
এই বুঝি তুমি এলে।
তুমি তাও এলেনা।
এরপর প্রকৃতির চিরাচরিত নিয়মে বসন্ত এলো
চারিদিকে ফুল আর ভ্রমরের ছোটাছুটি,
কোকিলের কুহু কুহু ডাক,
জোড়ায় জোড়ায় প্রেমিক যুগল বাহারি সাজে
মাতোয়ারা হচ্ছে  বসন্ত বরণে।
তবে আমার জীবনের বসন্ত হয়ে
তুমি আর এলেনা।  


একে একে কয়েকটি বছর পেরিয়ে গেলো
কত বর্ষা কত শীত, কত হেমন্ত চলে গেলো!
তবু তোমার সাথে আমার আর দেখা হলোনা।
জানো এখনো লোকাল বাসে উঠে,  
শাড়ী ও চশমা পড়া কোন  সুন্দরী রমনীকে দেখলে,
শুধু  তোমার কথাই  মনে করি।
ট্রাফিকের ভীড়ে তোমার সাথে মেতে উঠা খোশ গল্পের প্রহর গুলোকে এখনো মিস করি।
এখনো আমি তোমার কথা মনে পরলে
বড় আবেগী হয়ে পড়ি,
এখনো আমি  তোমার  অপেক্ষায়
পথ চেয়ে থাকি, তুমি আসবে বলে।