রাতের গহীন অন্ধকারের পরে ঠিক ভোর সাড়ে চারটেয়,
বেলগাছিয়া থেকে আসা প্রথম ট্রামটি আমার ঘুম ভাঙাতো।
সূর্যকিরণের অবগুন্ঠনে ঢাকা পড়ে যেত রুপোলি চাঁদ খানা,
কুয়াশায় আঁকা সেই ভোরের কলকাতা মনে পড়ে সুদূর প্রবাসে।


হৃদয়ে ঢেউ নাচতো গলি রাস্তার বৃষ্টি আর রজনীগন্ধার সুবাস,
হা হুতাশ করা বাতাসের গায়ে জানালার কাঁচে কান্নার ধ্বনি।
উদাসী মনের মাঝে গোধূলির আলো মেখে লুকিয়ে থাকে বিষাদ,
দইয়ের ফোটা কপালে নিয়ে মনে অজানা ভয় নিয়ে পরীক্ষা দিতে যাওয়া।


ক্লান্ত আনমনে নতুন এই পুরোনো শহরে কেটে গেছে বছর তিরিশ ,
কেমন আছো তুমি কলকাতা, দেখলাম চুলে সাদা সাদা ছোপ ?
গাড়ির আওয়াজে আর বাতাসের দূষণে তুমি বোধয় হাপিয়ে উঠেছ ?
তোমাকে আরো সুন্দর দেখালেও মনের মধ্যে দেখলাম নিস্তেজ নালিশ।


অচেনা বারের আয়নাতে দেখা হলো রাতে কিছুদিন আগে,
নতুন ইচ্ছের কাপে চুমুক দিয়ে বলেছিলে, ঝকঝকে চেহারাতে
ক্ষণিকের জ্বলে-ওঠা চোখে শুধালো আমায় 'ইচ্ছেটা আছে না চলে গেছে'
মনে হোলো বলি তাকে,ইচ্ছে আর খোঁজেনা আমাকে নতুন রাতের এই পুরোনো শহরে।