‘হোয়েন আই অ্যাম ওভারকাম বাই উইকনেস’


আরবিতে লিখিত উপরিউক্ত কবিতাটির ইংরেজি অনুবাদ করেছেন সিরিয়ার বিপ্লবী কবি নাজাত আবদুল সামাদ।


‘সেই কিশোরের স্থির সংকল্প দিয়ে বেঁধেছি বিক্ষত এই হৃদয়ের ব্যান্ডেজ;
রক্তপেশাব না করা অবধি তারা তার অণ্ডকোষে বেধড়ক পিটিয়েছে বিদ্যুতায়িত ধাতব লাঠি দিয়ে;
তার পরও সে খুঁড়িয়ে খুঁড়িয়ে গিয়েছে পরবর্তী বিক্ষোভ জমায়েতে,
সেই সংকল্প দিয়ে বেঁধেছি ক্ষতস্থল।
মন্দ্রসপ্তক চিত্কারে বলে যাচ্ছি...,
“মৃত্যু নেব, অপমান নেব না।”


মনে পরে গেলো সেই বিখ্যাত লাইন গুলো .....
বিদ্রোহী কবি কাজী নজরুল ইসলামের এক কালজয়ী সৃষ্টি 'বিদ্রোহী' কবিতা।


"যবে উৎপীড়িতের ক্রন্দন-রোল আকাশে বাতাসে ধ্বনিবে না
অত্যাচারীর খড়গ কৃপাণ ভীম রণ-ভূমে রণিবে না
বিদ্রোহী রণক্লান্ত
আমি সেই দিন হব শান্ত"


আজ সেই একই আঙ্গিক ও ভাষা সিরীয় কবিদের কবিতায় ।   “মৃত্যু নেব, অপমান নেব না।”


বিপ্লবের সাংস্কৃতিক দিক কবিতা অবশ্যই একটি তেজদীপ্ত শক্তি। জনতার দাবী বন্ধ করতে নিরীহ জনতার উপর সামরিক শক্তি দিয়ে আক্রমণ । নিরস্ত্র মিছিলকারীর উপর সেনাবাহিনীর গুলিবর্ষণ, রক্তপাত ও গণহত্যা। সরকার দেশের জনতা কি চায় তা শুনতে রাজি না বরং জনতার দাবী বন্ধ করতে শুরু করে নিরীহ জনতার উপর সামরিক শক্তি দিয়ে আক্রমণ।


এগিয়ে এসেছেন কবিরা। প্রচ্ছন্ন জাতীয়তাবোধের উত্তপ্ত ঘোষণা।
" ‘আমার জন্মভূমির সৌরভ সুধা আমার সম্প্রদায়
বৃষ্টিস্নাত, বারিসিক্ত এই মাটি
আমার সিরিয়া আমার একমাত্র ধর্ম।’


এভাবেই আজ বদলে যাচ্ছে সিরীয় কবিদের ভাষা ও আঙ্গিক কবিতায়। সিরিয়ায় রক্তক্ষয়ী গৃহযুদ্ধ লেগে যাওয়ার পর সেখানে কবিতা এবং সাহিত্যে যেন নতুন বিপ্লব ঘটে গেছে। প্রতিদিনই কোনো না কোনো কবির কলম জন্ম দিচ্ছে নতুন কবিতার। ধর্মকেন্দ্রিক ব্যঞ্জনা ও উপমার জায়গায় আজ প্রকাশ পাচ্ছে সিরীয় কবিদের জাতীয়তাবাদসুলভ উপমা-উৎপ্রেক্ষা।  বিমূর্ত কাব্য-ভাষাকে বাদ দিয়ে সরাসরি বক্তব্য ছুড়ে দিতে তাঁরা চোখা, তীক্ষ ও শাণিত শব্দমালা তুলে ধরছেন কবিতায় । সরকারবিরোধী আন্দোলন শুরুর পর সেখানকার কবিতা ও অন্যান্য শিল্পকর্ম অনেক বেশি জোরালো হয়ে উঠেছে। আরও ঝাঁজাল ও শাণিত কবিতা রচিত হচ্ছে গৃহযুদ্ধে প্রায় বিধ্বস্ত হয়ে পড়া সিরিয়ার মাটিতে।


আমরা পিছিয়ে কেন থাকবো ? আমাদের সময় এসেছে আমাদের এই রাজনৈতিক দুর্নীতির বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়াবার। বাস্তবতা হলো,দুর্নীতির  বিরুদ্ধে বিপ্লব অত্যন্ত জরুরি হয়ে পড়েছে। কবিতা লেখার জন্যে কবিদের উচিত কবিতার ভাষা ও আঙ্গিক পরিবর্তন করা।তরুণ প্রজন্মের কবিদের উচিত এ ব্যাপারে সোচ্চার হওয়া । সুন্দরের অনিবার্য অভ্যুত্থান হয়ে বিকশিত হবে কবিতা।
তবেই না কবি ও কবিতার অস্তিত্ব ?