যে ছিল দিনেরাতে অনেক কাছে
আজ সে কোথায় কেমন আছে  |
নিত্যকার  শয়নে, স্বপনে, জাগরণে
জীবনের প্রতিটি মুহূর্তে
বার বার ভাসে ছবি খানি তার  |
নয়ন সম্মুখে মনের আনাচে কানাচে
জমে আছে কথা গুলো হৃদয়ের কোনে  |


সব কিছু ফেলে রেখে
অজান্তে গিয়েছে চলে কোন সে লোকে
কোনএক অজানা স্বর্গপুরীতে  -
কে দেবে তার ঠিকানা  !
ছড়ানো রয়েছে ঘরে এখানে ওখানে
ব্যবহৃত খাট বিছানা পোশাক
অলংকার আরো কতকি  !
ভেসে আসে পুরোনো সব কথা  |


রেখেগেছে  - পুত্রকন্যা, জামাই-বধু , নাতি
ভ্রাতা- ভগিনী, আত্মীয় পরিজন  |
ঠাকুরের আসনে আছে
নিত্য আরাধনার প্রিয় দেবদেবী যত  |
সবই আছে পড়ে এখানে  -
নেই শুধু এইঘরের মাঝে
সশরীরে মূর্তিমান নিপুন কর্মচঞ্চলা
দয়াময়ী কর্ত্তী গৃহলক্ষী  |
বিয়োগ ব্যথায় সকলেই ভাসে
মুহ্যমান  তারা শোকের সাগরে  |


তারই ছবিখানি দেখি বার বার
উঁকি মারে পুরনো কতকথা  !
ভাবনা জাগে মনের কোনে
অপরাধ কি ছিল আমার !
নিরবে চুপচাপ চলে গেলে অসময়ে  
কোন সে সুদূর লোকে
মায়াময় পৃথিবীর বাইরে
অধমেরে একলা ফেলে এ সংসারে  |
জানিনা আর কোনদিন দেখা কি হবে !
জন্মান্তরে, নয়তো শ্বপনের দ্বারে  !
সহ্যকরেছ দীর্ঘদিন রোগশোক
নির্মম শারীরিক জ্বালা যন্ত্রনা
আসেনি নিরাময় ঔষধে, ডাক্তার কবিরাজে ।


প্রার্থনা  করেছি অনেকবার তোমার'ই জন্যে
দেবদেবীর দুয়ারে, শ্রীগুরুর কাছে
তোমার সুস্থশরীর, মঙ্গল কামনা করে
ভাবিনি সেসব ব্যর্থ হবে !
কি জানি, কি পাপ ছিল আমার
ঠাকুরের কৃপা হয়নি বর্ষণ ।
চলেগেলে আমায় একলা ফেলে
দুনিয়া ছাড়ার বয়স হয়নি তোমার !


সংসারে কখনো আমার ব্যবহারে
দুঃখ ব্যথা  যদি পেয়ে থাক
করজোড়ে ভিক্ষা করি ক্ষমা ।
আসুক নেমে ঈশ্বরের করুণাধারা
তোমার'ই পূত পূণ্য আত্মাতে ।


জীবনের বাকি কটা দিন
য়েখানে যেমন থাকিনা কেন
তোমার'ই স্মৃতি, তোমার'ই কথা
ভাসবে সদা বারবার নয়ন সমুখে  
অন্তরে বাহিরে তোমার'ই ছবি -
ঠিক যেন দয়াময়ী লক্ষীর প্রতিমা  |
আলপনার রেখা নির্জন নির্মম গৃহকোনে
অন্তহীন বিষাদ মলিন প্রাণের গভীরে -
রোদনে জাগ্রত সদা একটি হাহাকার ।|