একলা ঘরে মন বসে না
        বাদল দিনের শেষে,
টাপুর টুপুর বৃষ্টি পড়ে
        ছন্দে ছন্দে নেচে ধেয়ে।।
গাঁ ভিজে যায় চাতক বাঁচে
          মনে প্রাণে শান্তি আসে,
মেঘ কন্যারা বলছে ডেকে
          ঘরে চলে যাও নেচে,
জীবন সাজে নতুন করে
        প্রকৃতিতে শান্তি আনে।।
পথের ধুলো রয় না পথে
         কাদা হয়ে যায় শেষে,
হঠাৎ কেউ পিছলে পড়ে
        সর্বনাশ এই বলে,
মুখখানি ভার করে ‌চলে
       ও যে লজ্জা পেয়ে শেষে ।।


ভিজে ভিজে হলাম সারা গাঁ
           আনন্দেতে চলি ধেয়ে,
মৃদু হাওয়ায় কম্পনরত দেহ
           ভয়ে ভয়ে চলি বেগে,
যদি সর্দি- জ্বরে ধরে এসে
           মা বকবে দুষ্টু ছেলে,
এমন করে অসুখ হলে
         সুখে থাকি কি বা করে।।
আবার যদি নামিশ জলে
          দুঃখ পাবো তোর তরে,
একটা কিছু হয়ে গেলেও
           কে দেখবে তোরে শেষে।
আমার নাই সম্বল কভু
         যাসনা ওই জলেতে,
দুষ্টু আমার সুন্দর খোকা
       গর্ব করি তোকে নিয়ে ।।


ব্যাঙ ডাকে ঘ্যানর ঘ্যান
          মেঘ সাজে কালো হয়ে,
চটি দুটো হাতে নিয়ে চলি
         পথে পথে গান গেয়ে,
চলি অবিরত তার দিকে
          বাদল ধারার ছন্দে,
যেথায় মিলেছে ত্রিমোহনী
      সব মানুষের ভিড়ে।।
পদ্দ পাতায় জল ধরেনা
       শেষে টলমল করে ,
বিলগুলো ভরে গেছে সবে
         পানা ফুল ফুটে আছে,
অপরূপ সাজে দিন শেষে
           এ বর্ষার আহ্বানে ।।


আম গাছ বেয়ে জল ঝরে
           পাতাগুলো ভিজে সবে,
ঝরে প্রকৃতির সবখানে
           ছোট নদী যায় ভরে ,
মাছ খলখল শব্দ তোলে
             মাঝি ছুটে আসে ঘাটে ।।
বর্ষার গান গায় বাউল
              পথে পথে ঘুরে ঘুরে,
অবিরত সুর ধরে নেচে
               কি মজা কি মজা বলে,
ছোটদের হাততালি রসে
               সুন্দর তখন লাগে
এ যেন  বর্ষার আহ্বানে
              মেতে ওঠে পাড়া সবে।।


স্তব্ধ সকল আড্ডার ঘরে
              কেউ বসে না এখানে,
কেউ বলে না মধুর কথা
               বাদল দিনের কাছে,
কেউ দেখে না স্বপ্ন বিভোর
          চোখে চেয়ে রোজ রোজ।।
ভবঘুরে ছুটছে না আর
          রঙিন ঘুড়ির সাথে,
পেখম তুলে দূর দিগন্তে
            নীল আকাশের কাছে,
বিদ্যুৎ চমকে উঠে ধীরে
            আকাশের এক কোণে।।
প্রকৃতির টানে বারবার
          ছুটে আসি পথ বেয়ে,
এ বৃষ্টি ভেজা মায়ের কোলে
          বারবার আসি ফিরে,
ডাকছে যেন আবার ঘাটে
         এ বর্ষার আহ্বানে।।