শৈশবের প্রারম্ভে যখন আমি বুঝতে শিখেছি
স্মরণের পাতায় স্মৃতি জমা করতে সবে শুরু করেছি,
বাবা সেই সময়ের কথা বলছি
হতবাকে তোমায় ভালোবেসেছি।
বাবা, আমি দেখেছি!


তুমি আমার জন্মদাতা পিতা, ধরার আশ্রয়দাতা
ধরণীর সমস্ত বৃক্ষরাজি মিলে যেথায় হয়েছে বৃথা,
সেথায় সর্বেসর্বা তোমার পিতৃছায়া
কেমনে ভুলিবো আমি তোমারি মায়া।
বাবা, আমি দেখেছি!


পরিশ্রান্ত দেহ নিয়ে কর্মক্ষেত্র থেকে যখন ফিরতে
শত ক্লান্তিতেও তুমি ক্লান্তিহীন-সেই ভাব ধরতে,
দু’হাত বাড়িয়ে কোলে তুলে নিতে
ভরিয়ে দিতে গাল শত চুমুতে।
বাবা, আমি দেখেছি!


তুমি যখন খেতে বসতে আমাদের সাথে পাশে
আমাদের চাহিদা পুষাতে-দেখতে ঘাটতি কিসে,
সেরাটি দিতে আমাদের পাতে
কত ইনিয়ে বিনিয়ে খাওয়াতে।
বাবা, আমি দেখেছি!


কষ্টার্জিত স্বল্প আয়ের ভিতর কেটেছে তোমার জীবন
শত চড়াই-উতড়াই পেরিয়েও-জ্বেলে রেখেছো উনুন,
বুঝতে দাওনি তোমার বিষণ্ণ মন
আগলিয়ে রেখেছ বুকের ধন।
বাবা, আমি দেখেছি!


মন রক্ষায় কত আবদারের পরিপূরক হয়েছো তুমি
নিজকে বিলিয়ে যুগিয়েছো তা, বুঝতে পারিনি আমি,
অবুঝ মনের ঐ অত্যাচার
সয়েছো তবু করোনি বিচার।
বাবা, আমি দেখেছি!


জীবন নিংড়ানো নির্যাস ঢেলেছো সবটুকু-রাখোনি কিছু,
যৌবন পেরিয়ে তুমি এখন অক্ষম, হয়েছো ছোট্ট শিশু,
নিজের জীবন দিয়েছো বিলিয়ে
ত্যাগের সাথে বুকে বুক মিলিয়ে।
বাবা, আমি দেখেছি!


বাবা-শিশুতে ছিলাম অসহায় তখন তুমি ছিলে সহায়
ভয় নেই বাবা শেষ রক্তবিন্দু দিয়ে করবো তোমায়,
তোমার আখিঁ হতে দিবোনা সিক্ত
তোমার সেবায় থাকিবোনা রিক্ত।


ভেবোনা বাবা-এখনও আমি বেঁচে আছি।