কোথায় খুজো তোমরা বাংলা নববর্ষকে
নববর্ষ আছে বাংলা ভাষা-ভাষী
প্রতিটি নর-নারীর বুকে,
যারা ভাষাকে শুধু সুখে-মুখে নয়
চলনে-বলনে-স্বপনে ধরিয়া রাখিয়াছে
বাংলাময় প্রাঞ্জল-অমল কৃষ্টিকে,
ধরিয়া রাখিয়াছে-বঙ্গনামীয় মহাসৃষ্টিকে
খুঁজে পাবে কৃষাণ-কৃষাণীর বুকে
কলসি কাঁকে গ্রাম্যবধুর সর্পিল চলার বাঁকে
লাল শাড়ীতে গেঁয়ো মেয়ের স্বলাজ চোখে-মুখে।


ওরা পত্রিকা-মিডিয়া-শোনা কথায় শুধু নয়
জিন্সের প্যান্ট-টি-শার্ট আর সানগ্লাসে নয়
শর্ট জামা-কাপড়, ভিনদেশী ভং ধরিয়া নয়
মুখে আদো বাংলা, পাশ্চাত্যের অনুকরণেও নয়
বিলাস প্রতিক-শুধু ইলিশেও নয়,–
ওরা রাতের অবশিষ্ট ভাতে দিয়ে রাখে পানি
সকালে-পান্তা ভাত-পিয়াজ, কাঁচামরিচ একখানি।
সাথে থাকে গামছা দিয়ে ধরা- মলা-ডেলার চচ্চরি
রাঁধে কচু-লতি- পাঁচমিশালি শাঁকের তরকারি,
থাকে ঘরে পাঁতা দই, আহা কিযে মনোহারী
তৃপ্তির ঢেকুর তুলে গৃহিণী গুনগুনিয়ে গায় কাজরী।


বাংলা নবর্ষের জন্য বঙ্গবধুরা পাঁতে কাঞ্জির ঝাউ
ঘরে করা পুঁটি শুঁটকি-আলু ভর্তা আর উঠোনের লাউ,
হে বঙ্গবাসী খাইদ ছাড়া যদি নববর্ষের স্বাদ নিতে চাও
মেকিদের ছেড়ে গ্রাম্য মাটির ঘরে ঘরে যাও।
হাসিতে বাংলা- ক্রন্দনে বাংলা-ক্রোধে বাংলা
আমার বাংলাদেশের প্রতিটি বালুকণা উজালা ।


হে বঙ্গবাসী তোমরা যদি কাঁদামাটিকে ভালোবাসো
তোমরা যদি বাংলাদেশকে ভালোবাসো,
তবে এই দিনটি পালন করতে সবাই গ্রামে যাও-
গ্রামের সুশীতল ছায়াতরুর ছায়া ঘেসে
শ্যামল-শাঁওল চাদরের দূর্বাঘাসে
মাটির ঘরে, ছনের চালার নীচে বসে
গ্রামের মাটি মানুষের সাথে মিশে,
দাদা-দাদি, নানা-নানির সাথে হেসে হেসে
তৃপ্তির পিঁয়াস মিটাবে বাংলাকে ভালোবেসে।


খাঁটি শরিষার তৈল-পিঁয়াজ আর কাঁচা মরিচ দিয়ে-
খোলা মাঠে আকাশের নীচে- খাবে বেলা শেষে,
পূর্ণ তৃপ্তির নববর্ষকে পাবে খুঁজে, অবশেষে।