কেমন দেখতে সে
জাফর পাঠান


উৎসুক, উম্মুখ মন্ আমার প্রশ্নবাণে নিপীড়ন করে মোরে
কোথায় বসবাস ? কি রূপ তার ?
কখনও আসবে কি, নিস্প্রাণ এই ধু ধু মরুভূমির বুকে ?
উত্তরহীন নির্লীপ্ত আমি, অজ্ঞ আমি, একথা বুঝাব কাকে।


ক্ষণে ক্ষণে চলে প্রশ্নবান-বিদ্রোহী হয়ে উঠে আমার মন
ভেঙ্গে ফেলতে চায় সর্ব অস্তিত্ব-
একাকী মুহূর্তে অথবা ঘুমাতে গেলে-শুধুই আমাকে ডাকে,
বসলে নির্জনেতে বা যাই যদি কোন নিস্তব্ধ নদীর বাকে।


নিঃসঙ্গতে যদি উদাসী মনে দৃষ্টি ফেলি, আকাশ পাণে
বিচ্ছিরি ভাবে আকাশ হাসে-
কখনও যদি দেখি উড়ে যায় পাখি, মুক্তবিহঙ্গের ন্যায়,
পাখি গুলিও আমায় দেখে যেন লজ্জায় মুখ ঘুড়িয়ে নেয়।


যদি কখনও একাকি বসি, নির্জন-নিস্তব্ধ-বৃক্ষ ছায়াতলে
মাটি উপড়িয়ে বৃক্ষও দৌড়ে পালায়-
বলে নির্জীব-নিস্পৃহ তুই, ভাগ্ এখান থেকে অন্য কোথাও,
ছায়া দিবো ভালোবাসা অন্বেষীকে-যদি হয় পরগাছা-তাও।


ঘুমে দুঃসপ্ন দেখি, আঁতকিয়ে উঠি, একি হলো আমার!
ভাবি-আমি কি এতই হতচ্ছারা ?
মানবিকতা-নৈতিকতা পুষেও হয়েছি সঙ্গিনী প্রীতি হারা ?
তবে কেন ঘৃণায় প্রকৃতি করতে চায় আমাকে গৃহ ছাড়া ?


কিন্তু আমি যে মহান স্রষ্টার সৃষ্টির, ভালোবাসা পিয়াসি
আমি ভালোবাসতে চাই মানবতাকে-
হৃদয় উজাড় করে ভালোবাসতে চাই, সমগ্র নিসর্গকে,
আমি ভালোবাসতে চাই, নিষ্কলঙ্কী-নীর্লোভ নন্দিনীকে।


তাহলে কেন আমি প্রশ্নবাণে জর্জরিত হবো, অহর্নিশি
আমারই অন্তকরণ দ্বারা ?
কেন আমি সাদরে গৃহিত হচ্ছিনা প্রকৃতির এই নিবাসে,
কেন নেই, আকাশ-বাতাস-মানুষ-প্রানীকূলের পাশে ?


বহুরঙ্গা কূহকীনি এই জগতে, কেউ ভালোবাসে অর্থকে
কেউ ভালোবাসে রূপ যৌবনকে-
ভালোবাসে কেউ রূপ-প্রভাব-প্রতিপত্তি, আর ক্ষমতা,
লোভ লিপ্সায় ভরা এটা যেন তার ভালোবাসার মর্মতা!


আমার ক্ষেপা মনকে বিনয়ে প্রবোধি আমি, যাচি আমি,
এটাতো যুদ্ধ করে জয়ের বিষয় নয়-
অর্থ-কড়ি দিয়ে বাজার থেকে ক্রয় করা, পণ্যও নয়,
নয় জবরদস্তি প্রণয় মিলনে, প্রাপ্ত তৃপ্তির কোন বিষয়।


শত শান্তনা আর অভয়ে, তৃপ্ত নয় আমার অস্থির মন
ক্ষনে ক্ষনে উত্যক্ত করে চলে সে-
তাচ্ছিল্যের সুরে বলে, তুমি হতভাগা-অক্ষম-একপেশে,
পারলে না বলতে, কি রূপ তার, কেমন দেখতে সে ?