'মাটির পৃথিবী, ওকে ভালবেসে একলা দাঁড়িয়ে আছি
চুপচাপ শুধু সব দেখে যাই, বিদ্যুৎ মেখে বাঁচি ।
আমি একা আছি আকাশের নিচে মেঘের চাদর গায়ে,
ঝরনার জলে স্নান করি রোজ ,সাগরের জল পায়ে।
যুগ যুগ ধরে দেখে যাই শুধু, মুখেতে বেঁধেছি ঠুলি
গুমরে মরছি, বাড়ে তবু রোজ অভিজ্ঞতার ঝুলি।
মনে মনে ভাবি সব কিছু ছেড়ে এবার বেড়িয়ে পড়ি
অজানা বিদেশ অচেনা জগত দেখে আসি তড়িঘড়ি ।
হলদেটে চাঁদ, তার মুখ থেকে কিছু রং মুছে নিয়ে
সারা গায়ে মেখে ডানা মেলে দিয়ে তারাদের দেশে গিয়ে
বলে আসি এই পৃথিবীর কথা যেগুলো জমেছে বুকে
যুগ যুগ ধরে কুড়িয়ে রেখেছি পাথরের সিন্দুকে।
কত হিমবাহ , বরফের যুগ, গ্রাবরেখা -গিরিখাত
কত গিরিঝড়, অঝোর বৃষ্টি, হিমানী সম্প্রপাত,
কতনা জন্ম, কতনা মৃত্যু নীরবে দেখেছি রোজ
মানুষের লেখা কোনও ইতিহাসে মেলে না সে সব খোঁজ
কত ব্যথা আছে এই বুকে লেখা ক'জন সে সব বোঝে ?
উদাস বাউল মনটা আমার শুধুই শান্তি খোঁজে
অনেক আঘাত নীরবে সয়েছি কখনও বলিনি কিছু
তুষার শুভ্র মাথাটি আমার এখনও তো আছে উঁচু।
আমার বুকের পাঁজর ফাটিয়ে ডিনামাইটের দ্বারা
শান্তির ঘুম, ধৈর্যের বাঁধ, সব ভেঙে দিল কারা ?
গাছপালা কেটে, রাস্তা বানিয়ে,নদী গতিপথ রুখে
দু'পেয়ে মানুষ তোমরা ভাবছ এভাবে থাকবে সুখে ?
যদি ভেবে থাক চিরকাল আমি নীরবে সইব সবই
নীরবে কাঁদব ঠিক যেই ভাবে মাঝরাতে কাঁদে কবি।
ভুলটা বুঝবে যখন আমার সশব্দ প্রতিবাদ
এক লহমায় গুঁড়ো করে দেবে তোমার মাথার ছাদ ।
আমার জমানো কান্না যখন বজ্রের মতো এসে
আছড়ে পড়বে সব অহমিকা মুহূর্তে যাবে ভেসে।
গম্ভীর স্বরে আকাশ ফাটিয়ে বাজাব বিষাণখানা
যুদ্ধে নামব সঙ্গে থাকবে মৃত্যুর পরোয়ানা ।
তাই বলি শোনো, তোমরা আমার শান্তি নিয়ো না কেড়ে
নদীরা চলুক আপন খুশিতে, গাছেরা উঠুক বেড়ে।'