সৃষ্টিকর্তা হয়তো তার পৃথিবীকে নতুন করে গড়তে চলেছেন ।
সৃষ্টিকর্তা হয়তো তার পৃথিবীকে নতুন করে গড়তে চাইছেন ।
এই ভূ-পৃষ্ঠে জীবসমূহের মধ্যে উট-মহিষ-গরু-ছাগল-ভেড়া
নিদেনপক্ষে মশা-মাছি , কিংবা একটা পিঁপড়া যেমন জীব ।
মনুষ্য জাতি ও তার চোখে জীব ।
এই মনুষ্যজাতিকে বোধ-বুদ্ধি , বিচার ক্ষমতা এবং বাক শক্তি দিয়ে,
জীব সমূহের মধ্যে শ্রেষ্ঠত্বের সম্মান দিয়েছেন তিনি ।
আর দিয়েছেন পৃথিবীকে সুষ্ঠু ভাবে পরিচালনা করার দায়িত্ব ।
কিন্তু তিনি দেখেছেন পৃথিবীকে সুস্থ পরিচালনায় এই মনুষ্য জাতি অক্ষম ।
তাদের পাপ আর পদস্খলনের তিনি হতবাক ।
তাই হয়তো কঠোর সিদ্ধান্তে তিনি অবিচল পৃথিবীকে নতুন করে গড়বার ।
হয়তো ফল স্বরূপ আমরা দেখতে পাচ্ছি ,
কোভিড -19 অর্থাৎ করোনা নামক ভাইরাসটির কি বীভৎস রূপ ।
সারা পৃথিবী জুড়ে লক্ষ লক্ষ মানুষের মৃত্যু , কোটি কোটি আক্রান্ত প্রাণ ।
যে জ্যোতিষী অপরের ভাগ্য বলে দেয় , তিনি আজ নিজের ভাগ্য বলতে অক্ষম ।
যে বিজ্ঞানী দূরবীনে চোখ রেখে চাঁদের কোথায় কি কলঙ্ক আছে ,
এক নিমিষে বলে দিতে পারে , তিনি আজ নির্বাক ।
বহু জটিল রোগের ঔষধ আবিষ্কার করে যে গবেষক ,
গবেষক থেকে উচ্চতর গবেষকের আখ্যায় ভূষিত,  তিনি আজ নিরুপায় ।
তাই ভাবনার মধ্যে আর অবকাশ থাকে না , স্রষ্টা আর সৃষ্টির মধুর সম্পর্কের ছন্দপতন ।
স্রষ্টা বিমুখ, তিনি অনড় পৃথিবীকে নতুন করে গড়বার ।
আমরা দেখতে পাচ্ছি অতিবৃষ্টি, অনাবৃষ্টি, করোনা ভাইরাসের কদর্য রূপ মহামারী ।
তিনি অনড়, তিনি বিমুখ কারণ তিনি দেখেছেন আজকের পৃথিবীর নগ্ন প্রায় ।
সভ্যতার আড়ালে মুখ লুকিয়ে আছে মুখোশে ।
পিতৃত্বের তর্পণ পুত্রের দায়সারা কর্তব্যে, তাই কোটি-কোটি পিতা-মাতা আজ বৃদ্ধাশ্রমে ।
তিনি দেখেছেন লাল, নীল, সবুজ, হলুদ কিংবা গোলাপীর কদর্য নোংরামি, নির্লজ্জ দৌরাত্ম্য ।
সমস্ত সামনেওয়ালে পিছনে ফেলে, তফাৎ করে দিয়ে সিংহাসনে বসার রাজনীতি ।
হিমালয়ের মতো উঁচু হয়ে ওঠা ঘুষ, জালিয়াতি, প্রতারণা, খুন-খারাবি, ধর্ষণ আর বলাৎকার ।
তিনি দেখেছেন, দেখেছেন লুটেরাদের দল ।
দেখেছেন উদোর পিন্ডি বুদোর ঘাড়ে চাপিয়ে লুটতরাজের কৌশল ।
তিনি দেখেছেন দেখেছেন সেই সব ধর্ম ধ্বজাধারীকে ।
যারা ধর্মের সঙ্গে ধর্মের যুদ্ধ বাধিয়ে বইয়ে দিয়েছে রক্তগঙ্গা ।
তিনি দেখেছেন, দেখেছেন সেই সব ধর্মের মুখোশধারীকে ।
যারা ধর্মের সাথে ধর্মের সংঘাত বাধিয়ে লুফে নিয়েছেন মুনাফা ।
আর আজ এই জীবন মৃত্যুর সন্ধিক্ষণে দাঁড়িয়ে তিনি দেখছেন,
শ্রমজীবী, কৃষিজীবী, দিন মজুর মানুষ আজ দিনের পর দিন অভুক্ত অনাহারে ।
সাথে সাথে তিনি এও দেখছেন,
শ্রীল শ্রীমান্‌ শ্রীযুক্ত মান্যবর অথবা মান্যবরে ,সুদের অন্দরমহলের লুকিয়ে লুকিয়ে ভোগ-বিলাস ।
তিনি ইতিহাসও দেখেছেন, দেখেছেন আজম, নাদির সাহ দেখেছেন ইব্রাহিম লোদী ।
দেখেছেন মীরজাফরের চরিত্র দেখেছেন সিরাজের পরিণতি ।
তিনি একাল-সেকাল মিলিয়ে দেখেছেন রাজা শশাঙ্কের মাৎস্যন্যায়ের পুনরাবৃত্তি,
রাজকীয় লাম্পট্যের পুনরাবৃত্তি, মধ্যযুগীয় বর্বরতার পুনরাবৃত্তি ।
এবার হয়তো তিনি থমকে দাঁড়িয়েছেন, হয়তো সদর্পে ঘোষণা করেছে, অনেক হয়েছে আর নয় ।
তাই হয়তো তিনি আমাদেরকে তিলে তিলে মারতে চাইছেন ।
তাই হয়তো দুর্যোগের ঘনঘটা, দুরন্ত ঘুর্নি আইলা থেকে আমফান ।
তাই হয়তো এমন একদিন আসছে, আমরা কেউ এই পৃথিবীতে থাকবো না ।
হয়তো এমন একদিন আসবে আপন নিয়মে পৃথিবী তার কক্ষপথে ঘুরবে সূর্য উদয় হবে অস্ত যাবে ।
কিন্তু গোধূলির শেষ রং মাথার জন্য আমরা কেউ এই পৃথিবীতে থাকবোনা ।
চাঁদের উপচে পড়া হাসি দেখার জন্য আমরা কেউ থাকবোনা ।
হয়তো হয়তো এই সেই সন্ধিক্ষণ, এই সেই সন্ধিকাল, এই যুগের শেষ আর এক যুগের সূচনা ।
হয়তো হয়তো বা