সৌন্দর্যের লিলা ভুমি, পর্যটকের নয়ন মনি,
কমলগঞ্জের রূপের তিলক মাধবপুরের হ্রদ।
অপরূপ প্রকৃতি, অবারিত সৌন্দর্যের সমাহার,
টিলাময় পা্হাড়, গাছ-গাছালী, ছায়া বৃক্ষ,
চা, গুল্মরাজি, অসংখ্য বাহারী কীট-পতঙ্গ,
পাখ-পাখালী, জন্তু-জানোয়ার, রকমারী মাছ,
জলজ সম্পদ আর চা শ্রমিকের রূপে নন্দিত,
মানুষের হাতে বিধাতার গড়া এক অপরূপ সুন্দর,
সৌন্দর্যের লিলা ভুমি, পর্যটকের নয়ন মনি,
কমলগঞ্জের রূপের তিলক মাধবপুরের হ্রদ।
একদা ছিলণা হেথায় কোন জলাধার বা হ্রদ,
জলাধার থেকে সিক্ত করিলে নিত্য চায়ের গাছ,
সবুজ সতেজ হবে, সকল ঋতুতেই লভিবে উন্নত চা।
তাই কর্তৃপক্ষ টিলার ফাঁকে বাধিল মাটির শক্ত বাঁধ।
মানুষ্যকুল শক্ত করিয়া বন্ধ করিল সকল টিলার ফাঁক,
তিনটি মাটির বাঁধেই লভিল তাদের কাংখিত ফল,
সৃষ্টি হল মানুব সৃষ্ট একটি কৃত্তিম শুকনো হ্রদ।
পশু পাখি, জীব জন্তু, কীত পতঙ্গ ছিল যত প্রাণী,
ছাড়িয়া পলাইল তাদের অতি আদরের আদিবাস।
গাছ গাছালী, তরু লতা, ঝোপ জঙ্গল যত
অশ্রু ফেলিতে ফেলিতে বিসর্জন দিল তাদের প্রাণ।
তাদের অশ্রুতে সিক্ত হল শুকনো হ্রদের মাটি,
তাই দেখিয়া কাদিয়া উঠিল কঠিন টিলার মাটি।
টিলার অশ্রুতে ভরিয়া উঠিল হ্রদের সকল ভাঁটি,
বিষাদের ভারে নীলাভ হল হ্রদের সকল পানি,
সৌন্দর্যের লিলা ভুমি, পর্যটকের নয়ন মনি,
কমলগঞ্জের রূপের তিলক মাধবপুরের হ্রদ।
একাকীত্ব লাঘবের তরে হ্রদের জলে ছাড়া হল
রুই, কাতলা, মৃগেল, মাগুর, আরও কত মাছ,
ফিরিয়া আসিল বেঙ, সাপ, বিচ্ছু , বাদুর, মোরগ,
দোয়েল-কোয়েল, বুল বুলি, মাছ রাঙা, ময়না,
জন্মিল শাপলা-শালুক, কলমী লতা, রক্ত কমল, চাঁদ মালা,
নীল পদ্ম, লাল পদ্ম, শ্বেত পদ্ম আরও কত কি ?
ফিরিয়া আসিল হারানো সৌরভ, জাগিয়া উঠিল বন বাদার,
ফুটিয়া উঠিল রূপের বাহার, মনের মাধুরী, পাহাড়ী ফুল,
নিত্য আজি হেথায় বসে দেশ-বিদেশের পর্যটকের মেলা,
কেউবা বসায় কবির আসর, কেউবা গাহে গান,
কেউবা করে গল্প গুজব, কেউবা বসে চিন্তা করে,
কেউবা মজে বনের রূপে, ঘুরে ঘুরে বন বাদারে।
হেথায় হ্রদের পানি, চায়ের কানন, গাছ গাছালী,
গুল্ম লতা, পাখির কুজন, মানুষের কোলাহল,
ঝিঝির ডাক, বাতাসের গুঞ্জন সব একাকার,
মানুষের হাতে বিধাতার গড়া এক অপরূপ সুন্দর,
সৌন্দর্যের লিলা ভুমি, পর্যটকের নয়ন মনি,
কমলগঞ্জের রূপের তিলক মাধবপুরের হ্রদ।