বানভাসি হয়ে এসেছিলাম
অজ পাড়া গাঁয়ে,
নাম ছিল মালগোবিন্দ রোড।


পড়ন্ত বিকেলে যখন সূর্য ডুবে যেত দিগন্তে
একরাশ কালো ঘুটঘুটে অন্ধকার
জমিয়ে বসত, বসতবাড়ির চারপাশে।


বিষন্ন বৃষ্টিভেজা বিকেলে অফিস থেকে ফিরে
পাঁকে ইটসুরকি বিছিয়ে পথচলা।


সাঁঝের বেলায় সুরমান আলীর সাথে
গল্প জমে উঠতো চায়ের কাপে।


উত্তরকৃষ্ণপুরের কত আদি ইতিহাস কথা
আফ্রিকার আদিম মানবের গল্পগাথা।


যুগযুগান্তরের প্রব্রজনের কাহিনী
সীমান্তে কাঁটাতারের হাতছানি।


সুরমান আলীর কাছে শুনেছিলাম
ব‍্যাঙ্কের এক বাবুর কথা
যাঁর গায়ের রঙ ছিল
সাহেবদের মত টকটকে ফর্সা।


উনি আবার গল্প কবিতা লিখতেন
জমি কিনে বাড়ি করেছিলেন
এই তল্লাটে।


দু'দশক পরে আবার ফিরে এলাম
চাকুরী জীবনের পথচলা শেষে ---


বদলে গেছে, অনেককিছু বদলে গেছে
তল্লাটের নাম বদলে গেছে।
ইটসুরকি নেই, রাস্তায় সিমেন্টের ব্লক বসেছে।


তেতলা, চারতলা সারিসারি অট্টালিকা
মাথা উঁচু করে দাঁড়িয়ে
আকাশের পানে তাকিয়ে।


রাস্তায় হাঁটি চেনা পরিচিত মানুষের খোঁজে।


অবশেষে খুঁজে পাই,
ব‍্যাঙ্কের বাবু ছাপাখানায়
গল্প ছাপাচ্ছেন, - 'দেশভাগের গল্প'।


জনমুখে জানা গেল --
সুরমান আলী ইন্তেকাল ফরমাইয়াছেন।