দেখেছি,তাণ্ডবলীলা চালিয়ে লুটেরা
ছিনিয়ে নিচ্ছে একে একে প্রকৃতির
সব অলঙ্কার।চারদিক করে দিলো
ছারখার।
দেখছো,তবু তাদের মেটেনি আশ,
গলা টিপে তাকে করছে রুদ্ধশ্বাস।  
দেখো,আজও স্পষ্ট নির্দয়তার সেই
ছবি।
হায় রে,আমরা আছি কত নিকষ
অন্ধকারে!প্রতিবাদের সাহস হারিয়ে
ফেলেছি প্রায় সকলে।নয়তো আজও
নিষাদের অপ্রকৃতিস্থ এই বংশধররা
বিশ্ব প্রকৃতির হৃৎপিণ্ড লুণ্ঠনেরও এই
স্পর্ধা দেখায় কী করে?তার বুকেই
এভাবেই কি ক্রমাগত ছুরি বসাতে
পারে?
বলবো কী তোমাকে,দেখো কী যে
তাজ্জব ব্যাপার,নিঃশেষিত প্রায় এ
বিশ্বের অভ্যন্তরের জলের ভাণ্ডার!
দেখো,নিষাদদের কারবার।
মাদকতায় সিক্ত হয়ে তারা তরল
সোনা সহ অন্যান্য খনিজ সম্পদ
নিয়ত তুলে নিচ্ছে থোকে থোকে।
বলো তো,এ ভাবে প্রকৃতির ব্যাপক
রক্তক্ষরণ ঘটানোর কি প্রয়োজন
ছিল?
তার চোখের জলে প্লাবন ঘটছে
দেখেই অসহায় সাধারণ জনগণ
‘প্রকৃতিকে বাঁচাও’,বাঁচাও’ বলেও
করলো চিৎকার।তারা নিষাদদের
জানালো ধিক্কার।তবুও নিষাদরা
নির্বিকার।
দেখেছো নিশ্চয় এই দুঃসময়েও
অসহায় জনগণ আগলে রাখতে
পারেনি,প্রকৃতিকে।
এখনও বন্ধ হয়নি প্রকৃতির সেই
রক্তক্ষরণ।দেখছি না এখনো তার
দুঃখ কষ্ট প্রশমনের কোনও চিহ্ন।
ভাবো,‘বহ্নিশিখার মতো প্রজ্বলিত
এই যন্ত্রণা সহ্য করা যায় আর
কত’?
হয়তো এ অত্যাচার সহ্যের বাঁধ
মানেনি আর।প্রকৃতি তার রণমুর্তি
ধরে হয়তো এখন চারদিক করবে  
ছারখার।
বলছি,ইতিহাস বই খুলে দেখে নিও  
‘ঘটনাবহুল একবিংশ শতাব্দীর এই
বিশ সাল,বিশ্বে এ শতকে সর্বাধিক
মানুষের প্রাণঘাতী করোনার প্রাদুর্ভাব
কাল’,এ কথা লেখা হবে ইতিহাসে।
নিশ্চিত করে এ কথা বলতে পারি,
এ বর্ষ বিদায়ের প্রাক্কালে।
শোনো,বলি তোমাকে,‘করোনা কত
শত গ্যালন বিষ বয়ে এনেছিল’,সে
হিসাব জানি না বটে,তবে এ টুকু
জানি,‘সে ফণীদের মতো প্রাণঘাতী
বিষ ঢেলে কোটি কোটি মানুষের
প্রাণ নিধনে সক্ষম ছিল’।
বলি,মৃত্যু-মিছিল থেকে এ কথাটি
এখন স্পষ্ট হলো।
জানি না,কোথায় দাঁড়িয়ে রয়েছি
এখন?বন্ধ হলো কিনা প্রকৃতির
রক্তক্ষরণ এবং হলো কিনা তার
যন্ত্রণার প্রশমন।নয়তো,এ নতুন
বছরে সব মানুষের দুর্ভোগ এবং
মৃত্যু যন্ত্রণাও গড়াবে যে আরও
বহুদূর,একথা বলা যায়।
জনগণ সারাবছর ভুগলো জীবন
যন্ত্রণায়।অতিশয় দুঃখকষ্ট সইতে
না-পেরে আজও অনেকেই ঢলে
পড়ছে মৃত্যুর কোলে।অনেক দুঃস্থ
এখন যেন বাঁচার আশা-নিরাশার
দোলাচলে।
স্রষ্টা,তুমি এগিয়ে এসে নিষাদদের
হাত থেকে প্রকৃতিকে ও আপামর
নিরীহ মানুষদিগকে রক্ষা করো,
জানাই এই আকুতি।
নববর্ষে সেই মানুষদিগকে বাঁচার
দিশা দেখাও নতুন করে।