‘রাজামশাই! শুনতে পেলাম ঘুরে
গ্রাম ও শহরে, বলছে লোকে এই
দেশে ক্ষমতার শীর্ষে যারাই বসে
আছে তাদের ঔদ্ধত্য নাকি খুবই
বেড়েছে। কি
রাজার অপশাসনে দেশে গণতন্ত্র
ফল্গু নদীর মতো লোপ পেয়েছে।
বলছে তারা রাজার প্রিয় খয়ের খাঁ,
এ কাজে দু’হাত তুলে এখন সায়
দিয়েছে।
এখন দেশে গণতন্ত্র পুনঃ প্রতিষ্ঠা
করতে জনগণ উঠেপড়ে লেগেছে।
তারা শাসকের অন্যায়ের বিরুদ্ধে
প্রতিবাদেও সোচ্চার হয়েছে।
রাজামশাই! আপনার আবার এই
গণতন্ত্র না-গিলে খেলে মন ভরে না।
তাই এ কথা শুনে গোখরোর মতো
ফুঁসে উঠেছেন রাগে?
তাদের বাগে আনতে চেষ্টা তো কম
করেননি। ভাবছেন কি এখন তাদের
জাঁতাকলে পিষে মারবেন?
রাজামশাই! এ কাজ করতে পারেন।
এ ছাড়াও তাদের মারার আরও বহু
উপায় আছে।
তাদের বিরুদ্ধে আদালতে মিথ্যা মামলা
ঠুকতে পারেন, এক দু’টি নয়, একেবারে
শ’য়ে শ’য়ে।
রাজামশাই! বলবো কী আর, এ মামলা
চালানো, ব্যাপক খরচ। জনগণ সেই অর্থ
পাবে কোথায়?
তাই হার মেনে নিয়ে তাদের টানতে হবে
জেলের ঘানি। বুকফাটা কষ্ট হলেও তখন
তাদের সহজে জুটবে না ঠোঁট ভিজানোর
পানি।
তারপরও কি বলতে হবে, তারা যে মরবে
তিলে তিলে কষ্ট সয়ে?
রাজামশাই! ভাবছেন মামলা করার বিশাল
খরচ পাবেন কোথায়? বলি, সেসব নিয়ে
ভাবনা কিসে?
পাহাড়-প্রমাণ খরচ? তাতে কী? জনগণের
উপর চাপিয়ে দিলেই করের বোঝা তারা
সেই অর্থ না-যুগিয়ে চুপ থাকতে পারবে
নাকি?
রাজামশাই! বুঝুন এবার, এই নিয়ে আর
ভাবনা কিসে?