হয়তো কেহ এ প্রশ্ন করতে পারে,
‘মোহনায় এতো আবর্জনা কেন’?
জানি,তর্জনী তুলবে নদীর দিকে।
ভাবি,কেহ কি ফিরে তাকাবে না
নিজেদের দিকে।
এ কথাটি বললে,তুমি তো জানো,
ধেয়ে আসতে পারে দাবানল।বলি,
লাভ কী ঘটিয়ে প্রলয় কাণ্ড খানা।
কথাটি শিঁকেয় তোলা থাক না!
নদীকে এ প্রশ্ন করায় সে দুঃখের
সাথে কী বললো,জানো?
বললো তটিনী,‘জন্মাবধি রাতদিন
চলছি নিরবধি।দেখেছি,নগরায়নের
দৌলতে শহর এবং নগর বাসীরা
গৃহস্থলীর বজ্যাদি সহ শিল্পের এবং
কলকারখানা গুলির বহু আবর্জনা
নির্দয় ভাবে এদিকে ঠেলে দিয়েই
দায় সারা’।জানো,কেহ দিয়েছে কি
প্রহরা?
ধৃতরাষ্ট্র বেঁচে থেকে একাই প্রহরা
দিলে হয়তো এই ঘটনার সাক্ষী
জুটতো না মোটে।দুর্ভাগ্যই বটে।
এই ঘটনাটি ধ্রুবতারা অপলকে
দেখেছে।বলো তো,চোখ দুটি বুজে
থাকলে তার কী এমন ক্ষতি হতো!
হায়রে!জনগণের কাজের গুনাগার
দিতে কত কী করতে হয়,নদী কে!
দেখো,সুদীর্ঘ পথে যেসব আবর্জনা
পেয়েছে সবই সে কুড়িয়ে এনেছে।
দেখছো,ক্লান্তির ছাপ ফুটে উঠেছে
তার চোখে মুখে।বিস্ময় জাগে,কে
তার দিকে ফিরে দেখে!
জানো,সেদিন তার সাথে একান্তে
আলাপচারিতায় বললো তটিনী,
‘এই কাজটি করতে গিয়ে যৌবন
চুপিসারে নিয়েছে বিদায়!মোহনায়
পৌঁছে দেখি বার্ধক্য নিয়েছে ঠাই।
ভাবি,তবুও কি নিস্তার নাই?ইচ্ছা
ঘুড়ি উড়তে চায় না আর,স্থবির
প্রায়’।
দীর্ঘনিঃশ্বাস ছাড়ি’ বললো,‘হেমন্ত
এসে গেছে।পত্র ঝরে এখন।দেহের
ভেতর চলছে নিয়ত নিষ্ক্রমণের
আয়োজন’।
তবুও নাকি লোকে জিজ্ঞেস করে
তাকে,‘নদী কবে হবে তবে এসব  
আবর্জনার অপসারণ?
হায়রে,যেন সে ঠিকাদার,নিয়েছে
সমাজের সব জঞ্জাল অপসারণের
দায়ভার!তর্জনীটি তুলেও চিৎকার
করে বলে,‘তবে কী দরকার ছিল
সে সব বয়ে আনার’?
জানো,অভিযোগ জানাতে তাদের
কালক্ষেপ করতে নেই কো মানা,
সহযোগিতার হাতটি যে বাড়াতে
হয় সেটি তাদের অজানা।
বলো,এই প্রশ্ন শুনে সে কী দেবে
প্রত্তোত্তর?আদ্যন্ত এ ঘটনা দেখে,
‘সমাধানের উপায় কি হতে পারে’,
সে কথা তারা রা জিজ্ঞেস করেছে
সমুদ্রকে।
সে কি বললো জানো?গত্যন্তর নেই
হড়কা বাণ ছাড়া।বললো,দূর থেকে
তার গুরুগম্ভীর গর্জন শোনো।সেই
বানের জন্য একটু সবুর করো।