দেখেছি তাকে সে ছলছল চোখে
এক দৃষ্টিতে তাকিয়ে ছিল মধুর গোলা ঘরের দিকে।
বলা ভালো, মধুর গোলা ভরা ধান,
পুকুর ভর্তি মাছ, শস্যে ভরা জমির ফসল।
তার সে অবস্থা দেখে তাকে জিজ্ঞেস করতে ইচ্ছা হলো
তার কি ঈর্ষা হলো?
ঈর্ষাকাতর হয়েও সে করবে কি?
সে একথা ভালোই জানতো
মধুর সাথে মুখোমুখি লড়াই হলে
হেরে গিয়ে হবেই একেবারে নাস্তানাবুদ।
তবুও ঈর্ষায় বুঁদ হয়ে থাকলো, থামলো কৈ?
রাতে বিছানায় শুয়েও ভাবলো
কী করে পোড়াবে মধুর ঘর।
নষ্ট করবে তার সুখের সংসার।
তার একাজ না-করলে কি চলে?
আগেও সে কত সংসারে এমন কাণ্ড ঘটলো!
ছলেবলে বহু সংসার ধ্বংস করে ছাড়লো।
এখনও একই কাণ্ড! বসে বসে সলতে পাঁকাল।
একটু অগ্নি সংযোগ, সেও।
বলা ভালো, মধু যদু দু’ভাই ভালোই ছিল।
পাশাপাশি ঘর, তাদের সুখে থাকতে দিলো কৈ?
তাদের বুকের উপর দিয়ে মই না-চালালে কি চলে?
দেখেছি বোকা যদুকে দিলো নানান প্রলোভন
একেবারে শিশু ভোলানোর মতন
যেন সে তার জীবনধন।
তাকে উস্‌কে দিলো বাঁধাতে মধুর সাথে যুদ্ধ।
হলোও তাই,
এখন ওদের ঘরদোর দাউদাউ করে জ্বলছে।
যাই বলো এ কাণ্ড দেখে কি স্থির থাকা যায়?
জিজ্ঞেস করেছি তাকে, ‘বলবে তাদের কে, তোমার
জমির পাকা ধানে মই দিলো?
কেন বুদ্ধিমত্তা দেখালে ধূর্ত শৃগালের মতো?
কেন এভাবে আগুন জ্বালালে?
ভাবলে বুঝি এ যুদ্ধে মধুর শক্তি-ক্ষয় হলেই
নেকড়ের মতো তার উপর ঝাঁপিয়ে পড়ে
ছিঁড়ে খাবে তার নাড়িভুঁড়ি’?
হায়রে, ঈর্ষা-কাতর মানুষ কত কী করতে পারে!
সে ভাবলো বৈকি, এ যুদ্ধে মধুর ক্ষয় ক্ষতি কত হলো
সেসব নজরে না-রাখলে কি তার চলে?
তাই সে চড়ে বসলো একেবারে রকি পর্বতের শৃঙ্গে।
জিজ্ঞেস করেছি তাকে, ‘এখন দেখছ কী?
আকাশটা কালো মেঘে ঢাকলো নাকি?
শুনছ মেঘের গুরুগম্ভীর ভয়ঙ্কর গর্জন?
যখন তখন ঘনিয়ে আসতে পারে দুর্যোগ।
ভাবো, যা আবহ, তৃতীয় বিশ্বযুদ্ধ বাঁধবে কি?
ভাবতে পারছ তেমন অবস্থা হলে
কী হবে এ যুদ্ধের পরিণতি’?