‘ভোট এলে কত কী যে ঘাড়ে
চেপে বসে,সেসব বলবে কাকে?
কাউকে বলার মতো তো নয়।
ঘুমোতে গেলেও ভয়’।এমনি
দশা হলো তার।
এ দশায় পাথরে মাথা ঠোকা
নয়তো জেলে ঘানি টানা ছাড়া
গত্যন্তর খুঁজে পাওয়াও দুষ্কর।
জীবন দরিয়াতেও ওঠে ঝড়!      
অদৃষ্টের শরণাপন্ন হয়ে গোমড়া
মুখে তাকে বসে থাকতে দেখে
জিজ্ঞেস করে ফেলেছি সেদিন,
‘তোমাকে এতো বিষণ্ণ দেখছি
কেন’?
সে কি বললো শোনো।বললো,
‘এদের সহজে মুশকিল আসান
করা যেতো,যদি শুধুই ভারের
বোঝা হতো,ট্রলিতেই চাপিয়ে
নিয়ে যাওয়া যেতো।কিন্তু সে
হওয়ার নয়’।
‘কী এমন তারই ঘাড়ে চেপে
বসতে পারে?’একথা ভাবছো
নাকি এ জরাজীর্ণ মন্দিরের
পিলারে ঠেস দিয়ে বসে?
তাহলে না-বললে নয়,বলতেই
হয়।শোনো,সেদিন বললো সে,
‘এসব ভারের কোনও বিষয়
নয়।এই বিষয়টা হলো খাদ্য
পরিপাক সংক্রান্ত।তবে দাঁতের
নয়,পেটের।হজমের গণ্ডগোল,
পরিপাক তন্ত্রে পড়ছে ব্যাপক
শোরগোল।
কপালে ঘাম। সহস্রধারা কে
রুমালে কিছুটা সংযত করে
নির্ঝরে সে বলে গেল,‘দুখের
সাথে এ-কথাটি বলতে হয়,
ভোটের বাদ্যটি বেজে ওঠার
সাথে সাথে চারদিক উত্তাল,
বইছে যেন ব্যাপক ঝড়।এই
আবহে,রাজনৈতিক প্রতিপক্ষরা
যে যেমন খুশি ভোটে দাঁড়িয়ে
পড়ছে।যেন তুঘলকি ব্যাপার!
আমার তো মনে হয়,এ-যেন
এক প্রকার স্বেচ্ছাচার।বলছি,
শুধু কী তাই,রহস্যেও ভরা!
ভোটে জনতার দরবার থেকে
জিতে এসে মণ্ডামিঠাই খাবারে
ভাগ বসানোর ইচ্ছা খুব।তাই
ওদের দেখলে দাঁত কিড়মিড়
করে,রাগে মাথার চুল দাঁড়িয়ে
পড়ে,যেন একেবারে শজারুর
কাঁটা’।
বললো সে,‘ওদের কী দরকার
ভোটে প্রার্থী দেওয়ার?শোনেনি
মোটে।তাই ইচ্ছা হয় ওদেরকে
মুলোর মতোই চিবিয়ে খেতে।
কিন্তু এই চেষ্টা করতেও ভয়,
ইদানীং বাদ সাধছে পেট টি।
হজমের খুব গণ্ডগোল’।
নড়েচড়ে বসে বললো সে,‘বলি
শোনো!যেটুকু খেয়েছি সেগুলো
অপাচ্য থেকে গেছে।সি.বি.আই
আর ই.ডি দপ্তর থেকে নানান
আধিকারিক যখন তখন হানা
দিয়ে খুঁচিয়ে জিজ্ঞেস করে পেট
থেকে অপাচ্য সব কথাই বের
করে আনে।সেসব হজম করতে
না-পারায় এখন সমস্যা যত!
পশু খাদ্য কেলেঙ্কারির মতোই
হয়তো চলবেও বিচার পর্ব।
উঠতেও হতে পারে বিচারের
কাঠগড়ায়।অপরাধী সাব্যস্ত
হলে ঠেলে পাঠাবে জেলে’।
বিষণ্ণ মুখ,কপালে ঘাম ঝরে
অবিরাম।আবারও সে রুমালে
মুছে ফ্যাকাসে গলায় বললো,
‘সাধে কি এই কাজটি থেকে
থাকছি বিরত?যেটুকু খেয়েছি,
ওদের কিভাবে হজম করবো
ভাবছি।বেগতিক মনে হলেই
হতে হবে দক্ষ চিকিৎসকদের
শরণাপন্ন।তোমাকে বলবো কী,
এখন-ই মনে হচ্ছে,মরণাপন্ন!