নদী-ঘাটে কেউ শুয়ে আছে
সারা শরীর ঢাকা কালো কাপড়ে।
অদূরে ঝোপঝাড়ে বোধ হয়
শৃগালদের চলছে ব্যাপক মহোৎসব
আনন্দে ডাকছে হূক্কা-হুয়া।
ঘাটে লোকে লোকারণ্য
হীনমন্যতায় তাদের মুখগুলো বিবর্ণ।
লোকগুলো কারা?
জিজ্ঞেস করে জেনেছি-
তাদের কেউ ভূমিহীন কৃষক
কেউ বন্ধ কলকারখানা থেকে বিতাড়িত শ্রমিক
কেউ কেউ পরিযায়ী শ্রমিক
অনেকে আছেন শিক্ষিত বেকার যুবক-যুবতী
এ ছাড়াও আরো অনেকে।
শুনেছি সকলেই সমাজের দ্বারা নাকি বঞ্চিত
নখরদের অত্যাচারে ক্ষতবিক্ষত!
শতসহস্র এই মানুষদের মাঝে দাঁড়িয়ে
কবি বিনীতভাবে বললেন তাদের,
‘এনে দিতে পারেন সেই ভাঙা ভেলা
যে ভেলায় লখিন্দরকে নিয়ে নদীতে ভেসেছিল বেহুলা।
একটু কষ্ট করে সে ভেলায় তুলে দেবেন
কাল-কেউটের দংশনে যে মৃতবৎ পাশে শুয়ে আছে।
তাকে নিয়ে ভাসবো ভেলায় যদি বাঁচিয়ে আনতে পারি!’
সে সময় বিষণ্ণ আকাশ যেন সেদিকে চেয়ে আছে!
বিলম্ব অনিষ্টের কারণ হতে পারে ভেবে
জনগণ তড়িঘড়ি সে কাজ করতে গিয়ে
কালো কাপড়ের ঢাকা সরিয়ে হতবাক!
রাখ ঢাক না-করে সকলে চিৎকার করলো সমস্বরে
‘সে কি!এ যে সমাজ, লখিন্দরের মতো শুয়ে আছে!
সারা শরীর ছেয়ে গেছে বিষে
গাল বেয়ে ঝরছে বিষাক্ত রক্ত।
তাকে ভাসাতে হবে ভেলায়?