দেখেছি একজন নেশাগ্রস্ত ব্যক্তি
সেদিন হেলে দুলে বলতে বলতে
চলে গেল,‘হায় রে দুর্ভাগা দেশ,
এ দেশে কত কী হতে পারতো’।
শুনেছি,নখরদের আঁচড়ে হৃদয়ে
গভীর ক্ষত হলে তবেই হতাশা
থেকে এসব কথা নাকি বেরিয়ে
আসে!
বলি,যে ভাবনাকে মাথায় রেখেই
সে একথা বলুক না কেন,বলো,  
বিনা বাক্য ব্যয়ে মাথাটি নেড়ে
সায় দিয়ে কিংবা উচ্চস্বরে আজ
আমরা কি বলতে পারি,‘হ্যাঁ,এই
কথাটি সত্য’?
এ ব্যাপারে তার এ-কথায় সায়
দিয়ে বলি,সে যে-কথাটি ভাবতে
পারছে কিছু ব্যতিক্রমী জনগণকে
বাদ দিলে কোটি কোটি মানুষেরা
শান্ত মস্তিষ্কেও সেকথা  ভাবতেই
পারছে না এদেশে।
রাতদিন সমস্যার আঁতুড়ঘর খুঁজে
ক্লান্ত হয়ে শেষে বলতে ইচ্ছা হয়,
‘সত্যিই,সেলুকাস!তোমার তৃতীয়
নয়নে কী যে অসীম দূরদৃষ্টি ছিল!
সেই হরিণী কেই আজও পাই না
রাতদিন খুঁজে!
সেই আঁতুড়ঘর টিকে খুঁজতে গিয়ে
প্রথমেই গণতন্ত্রের চতুর্থ স্তম্ভ কে
দেখে ভাবি অনেক সংবাদমাধ্যম
সিরাজদৌল্লার প্রধান সেনাপতির
চেয়ে কম কিসে?
ব্যাপক পক্ষপাতদুষ্ট।অর্ধ সত্য ও
বিকৃত সংবাদ পরিবেশনে এখন
সিদ্ধহস্ত।দেশ ও জনগণের মঙ্গল
ভাবছে কয়টি সংবাদ মাধ্যম?
তারা তাদের নীতি আদর্শকেও
সহজেই করছে হজম!
ভাবি,দেশে নেতা-নেত্রীদের কথা
বলবো কি?এখনও স্বাধীনতার
শতবর্ষ পূর্ণ হয়নি,তার আগেই
দেশে বহু নেতা-নেত্রীর কর্মকাণ্ডে
গণতন্ত্র এখনি হয়ে পড়ছে যেন
শয্যাশায়ী।ঠক ঠক করে কাঁপছে
তার সারা শরীর।
যেতে হবেও না বহুদূরে কিংবা
খুঁজতেও হবে না আতস কাচে,
আশপাশেই এমন বহু সমস্যা
আছে যাদেরকে সহজে মিটিয়ে
দেওয়া যায় অল্প সময়ে।তবুও
যেতে পারবে না তাদের ধারে
কাছে।খুঁজেও পাবে না তাদের
আঁতুড়ঘর।
দেখো,সেসব সমস্যা গুলিকেই
নেতা-নেত্রীদের অনেকে শিঙি ও
মাগুর মাছের মতো জিয়ে রাখে
বছরের পর বছর।একবার ভাবো,
তারা এ কাজ করে কোন সাহসে?
খোঁজো,সমস্যার আঁতুড়ঘর।
জনতা যদি না-ছুটতো নেতাদের
পিছে পিছে মিটিং মিছিলে কিংবা
মাঠে ও ময়দানে নেতাদের ভাষণ
শুনতে,বারেক যদি তারা ভাবতো
মিডিয়ার দৌলতে অবসর সময়ে
সেই ভাষণ শুনবে ঘরে বসে,যদি
অভ্যাসটা বদল করতো,সব নেতা
ও নেত্রীরা তখন বাধ্য হতো মাঠ
ও ময়দান ছেড়ে স্টুডিওতে এসে
তাদের ভাষণ দিতে সব জনগণের
উদ্দেশ্যে।
বলো,তখন কি এ ভাবে কর্মনাশা        
দিন গুনতে হতো?ভাবো,ভরসার
স্থানটি আজকাল খুঁজে পাচ্ছো কি
কোথাও?
দুর্দশা দুয়ারে কড়া নাড়লে কত
কী যে ঘটে।ভাবো,যখন মরণাপন্ন
আপন আত্মীয় পরিজনকে কিংবা
সন্তান সম্ভবা মায়েদের হাসপাতালে
পৌঁছে দিতে গিয়ে কিংবা চাকুরীর
প্রার্থীদের ইন্টার্ভিউ দিতে হাজির
হওয়ার সময়,বোর্ড কিংবা কোনও
বিশ্ববিদ্যালয়ের চূড়ান্ত পরীক্ষা দিতে
গিয়ে কিংবা দেশবিদেশের দূরপাল্লার
ট্রেন বা বিমানের যাত্রী হয়ে গন্তব্যে
যেতে গিয়ে মিটিং মিছিলের দরুন
যানজটে পথে আটকে পড়ে মাথাটি
ঠুকছো দুখে,তখন ‘উন্নয়ন’ এ সব
দেখছে নাকি ট্যারা চোখে?
বলতে কোনও বাধা নেই বিলম্বিত
হলেও জনগণের বোধোদয় হলো না
এখনও।