সে এ কী শুনিয়ে চলে গেলো? ‘বোঝাপড়া?’
তারপর সারা পাড়ায় সে নিয়ে শুরু হলো গুঞ্জন!  
জনগণ বলতে শুরু করলো,
‘কী নিয়ে বোঝাপড়া? মালুম হলো না’।
নানান তথ্য উঠে এলো তাদের মধ্য থেকে
অনেকে ভাবলো,
‘তবে কি সাধারণ জনগণের অর্থ লোপাটের পরে
সেই অর্থ নিয়ে বোঝাপড়া,
ভাগবাটোয়ারা? পাড়ার ক্ষমতা দখল?
পরবর্তীতে কার উপর বর্তাবে অর্থ লোপাটের দায়ভার,
সেও কি আলোচিত হলো?’
বলা ভালো দেখেছি, যে অর্ধ-উলঙ্গ বৃদ্ধ
একটা দোমড়ানো মোচড়ানো থালা হাতে
সামান্য ভিক্ষার জন্য বসে থাকে ফুটপাথে
সে তেতে উঠলো, একেবারে তপ্ত তেলে ফুলুরির মতো!
ঢেকুর তুললো, যেন তৃপ্তির ঢেকুর!
বললো, ‘ভালো। শুধু ভালো বলি কেন?
খুবই ভালো, সে কথাই বলার ছিল'।
দু’হাত তুলেও নাচলো এ বৃদ্ধ বয়সে।
বললো রসে বসে,
'না-ই বা লাগুক লোপাট হওয়া জনগণের অর্থ
স্বদেশের উন্নয়নের কাজে,
তবে সেটি লাগতে পারে না কি
কোনও দলের শ্রীবৃদ্ধি ঘটাতে?
নয়তো ব্যক্তিগত
কারো লোভ লালসা ও সম্পদ সৃষ্টির কাজে?
এমন ঘটনা এখন তো প্রায়শ ঘটে।
সেই অর্থ যে কাজেই লাগুক না কেন, ভালো!'
এ কথাও বললো বৃদ্ধ, ‘ভাবছো দেশাত্মবোধ?
এসব একেবারে সেকেলে ব্যাপার।
এসব ভেবে ব্যক্তিগত সম্পদ বেড়েছে কার?
বিদেশ ভ্রমণ, সেও।
যারা এই অর্থ লোপাটের কাজে জড়িয়ে আছে,
ভাবো, কী উন্নত তাদের চিন্তা-চেতনা!
নিজেদের জন্য অন্তত ব্যাপক ব্যাঙ্ক-ব্যাল্যান্স,
বিলাসবহুল বাড়ি গাড়ি এসব তো করতে পারছে।
তারা ভাবছে বৈকি, স্বদেশ লাটে উঠলে ক্ষতি কী?
যে সাধারণ জনগণ
স্বদেশ স্বদেশ করে চিৎকার করে মরছে,
দেশের স্বাধীনতা লাভের এতোগুলো বছর পরেও
রোজ তাদের দু’বেলা দু’মুঠো ভাতও কি জুটছে?’
যাক গে, যা ঘটছে এদিক-সেদিকে,
দিনদুপুরে কিবা রাতের অন্ধকারে!
তেমন কোনও খবর কানে এলেই
দেখেছি সে চিৎকার করে বলে ওঠে,
‘যাক গে, বাঁচা গেল! যা হলো তাতে,
অন্তত প্রতিপক্ষ দু’দলের সংঘাত তো এড়ানো গেল’।