সমাজ! আজকে জানতে খুবই ইচ্ছা করছে
ধর্মনিরপেক্ষ রাষ্ট্র হিসাবে হয়ে উঠেছ কতটা
পরিণত?
শোনো, অদূরে আমড়া গাছটির মগডালে
বসে তারস্বরে চিৎকার করে কাকাতুয়াটি
বলছে, ‘সমাজ! সেই আদিম কাল থেকে
নারী ও পুরুষের মধ্যে বইছে ভালোবাসার
ধারাপাত।
কে বলতে পারে মানব মন কোথায়, কখন
করবে কত গভীরে রেখাপাত? কে বলতে
পারে কোন নারী-পুরুষের মধ্যে গড়ে উঠবে
ভালবাসার সেতুবন্ধন?
জানতে ইচ্ছা করছে, বলবে সমাজ, ধর্ম
কি প্রাচীরের মতো বিবাহ-বন্ধনের ক্ষেত্রে
রুখে দাঁড়াতে পারে?
তবে আজও কালের এমনি নির্মম পরিহাস
অনেকে তাদের ধর্মনিরপেক্ষ বললেও প্রকৃত
শিক্ষার অভাবেই তাদের মধ্যে রয়েছে পর
ধর্মে সহিষ্ণুতার অভাব।
একটু নেড়ে চেড়ে দেখো আর সেই কারণেই
তাদের অনেকের দাম্পত্যজীবনে শুরু হচ্ছে
বিবাদের সূত্রপাত।
সেই কারণেই তাদের অন্তরের ভালবাসার
সেতুবন্ধনও নড়বড়ে হয়ে দাঁড়ায়।
বলো সমাজ, কোনও যথার্থ ধর্মনিরপেক্ষ
রাষ্ট্রে নারী-পুরুষ দৃঢ় ভালবাসার বন্ধনে
জড়ালে তাদের কেউ কি সাথীর ব্যক্তিগত
ধর্মবিশ্বাস কিংবা ধর্মাচরণে প্রতিবন্ধকতা
সৃষ্টি করতে পারে?
প্রতিটি সংসারে স্বামী-স্ত্রীর প্রত্যেকের নিজ
ধর্মাচরণে যদি স্বাধীনতা থাকে, তবে ভিন্ন
ধর্মের নারী ও পুরুষ বিবাহবন্ধনে আবদ্ধ
হলে কেন হবে বিবাদের সূত্রপাত?
বলবে, কেন আজও প্রচলিত বিবাহ আইনে
‘ধর্ম’ নামক ঘোড়ার লাগামকে আঁটসাঁটো
ভাবে রেখেছ ধরে? কেন বিভিন্ন ধর্মভিত্তিক
বিবাহ-আইন আজও সমাজে বহাল?
সমাজ, তবে তুমি কি দ্বিধাগ্রস্ত, ‘আজ গড়ে
তুলতে পেরেছ কি প্রকৃত ধর্মনিরপেক্ষ রাষ্ট্র?
আর তাই কি ‘ধর্ম’ নামক ঘোড়াটির লাগাম
আলগা করতে ভয়, বিবাহবন্ধনে আবদ্ধ ভিন্ন
ধর্মের নারী-পুরুষ যদি ধর্মের প্রাচীরে মাথা
ঠুকে পড়ে?
বলি, সমাজ, গোড়ায় গলদ থাকলে তাকে
দ্রুত শুধরে নেওয়া দরকার, নয়তো বিপত্তি
দেখা দিতে পারে।
দেখো, দূর থেকে সো-সো শব্দ করে ধেয়ে
আসছে দমকা হাওয়া। কে জানে,সেটি ভেঙ্গে
চুরমার করবে কি তোমার নিজ হাতে গড়া
প্রাচীর?’