বোষ্টমী! নিছক অভিযোগও ভাবতে পারো
বলোতো বসন্ত বিলাপ শোনাবে আর কত?
ভেবে দেখো শৈশবে একটা সময় ছিল
হাতে হাত ধরে বন্ধুরা মিলে
মাঠে গোল্লাছুট খেলতে যেতে
নয়তো চু-কিতকিত খেলে বিকালে সময় কাটাতে।
যৌবনে? দেখেছি ঘুড়ি ওড়াতে পারতে দুরন্ত
তোমার প্রাণবন্ত রঙিন স্বপ্ন-ঘুড়িগুলো
যখন মনোকাশে পই পই করে উড়তো
ঘুড়ির সুতোতে মাঞ্জা এতো বেশি থাকতো
তোমার ঘুড়ির সুতোর প্যাঁচে
বহু ঘুড়ি কাটা পড়ে ঘুরপাক খেতো।
এই তো কিছুদিন আগেও ঘুড়ি উৎসবে দেখেছি
ঘুড়ি খেলায় তোমার ঘুড়ির প্যাঁচে
বহু কাটা ঘুড়ি কানা গলিতে পড়ে
ভয়ে ভুজঙ্গের মতো গুটিসুটি মেরে রইলো
নয়তো কাটা ঘুড়িগুলি মুখ থুবড়ে পড়লো
কানা গলিতে ঘন অন্ধকারে।
ওদের দুঃখরা হাত-পা ও ছোঁড়াছুড়ি করলো
বাঁচার তাগিদে।
বলার অপেক্ষা রাখে না বরাতে দুঃখকষ্ট থাকলে
জীবনে এমন কত কী ঘটে!
দেখছি এখন বার্ধক্যে শীতের দুপুরে অবসরে
নিকনো উঠোনে উল কাঁটা নিয়ে বুনো সোয়েটার।
ছানি পড়া চোখ
চশমা দিয়ে ভালো করে দেখতেও অপারগ
সোয়েটারের ঘরগুলো কানা মাছির মতো হাতরে বেড়াও
নিখুঁত বোনা, এখন সে আর হয় না
কেননা রোগ ব্যাধিও জড়িয়ে ধরছে আষ্টেপৃষ্ঠে,
ভুগছো ব্যাপক জীবন যন্ত্রণায়।
এই তো সেদিন কপোত-কপোতীরা
যখন উড়ে এলো সাদা মেঘমালার মতন
চশমা দিয়েও স্পষ্ট দেখতে পাওনি সামনে কী আছে
দেখলে চারদিকে শুধুই অন্ধকার
কালো মেঘে যেন আকাশ ছেয়ে আছে।
হায় রে, জীবন-নদীর চলার পথে
ধাপে ধাপে এমনি কত কী ঘটে।
বলো, এ পরিস্থিতিতে হলো কী?
ভাবখানা যেন অদ্ভুত বিশ্বরূপ দেখে
তোমার মুখ থেকে মিলিয়ে গেলো প্রশান্তির ছাপ।
এখন বিলাপ করছো নিয়ত।