শোনো, কোনও বিলাপ শোনাতে আসিনি।
মহারাণী, যাই বলো শুধু মনে করিয়ে দিতে এসেছি
বহ্নিশিখার মতো চারদিক যে দাউদাউ করে জ্বলছে
ভেবেছো, কোনও কারণ রয়েছে কি পিছে?
জেনো, কোনও কিছুই অনাহূত নয়
এ বিশ্বব্রহ্মাণ্ডে যা কিছু হয়
সে সবের পিছনে থাকে কোনও না কোনও কারণ।
ভেবে দেখো, এসবের পিছনে অশনি সংকেত ছিল আগে
সে সময় ঘুমিয়েছ জেগে।
মহারাণী, দানিয়ুব নদী দিয়ে এই অবসরে
গড়ালো কত জল!
সাহারা মরুভূমিতেও উঠলো মরুঝড়।
সেসব দেখেও দেখনি, শুনেও শোনোনি চেতাবনি।
মহারাণী, ভেবে দেখো যারা তোমার মনোমন্দিরে
ঢং-ঢং করে মঙ্গল ঘণ্টা বাজাতে এসেছিল
শোনাতে চেয়েছিল মনুষ্যত্বের মর্মবাণী
তুমি সেকথা শুনতে চাওনি
বরং সদর্পে তাদের তুচ্ছ তাচ্ছিল্য করে
ছুঁড়ে দিয়ে কাঁটা বনে সুখ-বিলাসে কাটাতে চেয়েছো।
তোমার পোষ্যগুলি সে সময় দুঃখে
নিজেদের বুকে অনর্গল মেরেছিল থাপ্পড়
মনঃ কষ্টে মাটিতে কেটেছিল আঁচড়,
তুমি রঙ্গ-তামাশায় সে সময় কাটালে অবসর।
বলো, এখন দায় ঝেড়ে ফেলতে পারবে কি?
মনোক্লেশে গৃহে অরন্ধন পালন করেও করবে কী?
একথা শুনে গাত্রদাহ হচ্ছে নাকি?
এখন টের পাচ্ছো কি জেগে ঘুমনোর পরিণতি?
দেখো, দাউদাউ করে জ্বলছে চারদিকে
হিসাব কষে দেখো কতটা হলো ক্ষতি।
তোমাকে নিয়ে চলছে নাকি যমে মানুষে টানাটানি?
যে কোনও সময় হতেও পারে নাকি অঙ্গহানি?
কী জানি, ঘটবে কী!
দেখো, অশনি দিক চক্রবালে মারছে উঁকি।