ভোজবাড়িতে খাদ্য পরিবেশনের
এতো সুন্দর আয়োজন যে যতই
তন্নতন্ন করে খুঁজে দেখো,কোথাও
ত্রুটি খুঁজেও পাবে না এক রতি
কেন না সর্বদা নেওয়া হচ্ছে বহু
বাড়তি সতর্কতা।
তাই বলে কি,শুধু পেটে খেলেই  
চলে?মগজ অভুক্ত থাকবে কি?
তাকেও নিশ্চয় খেয়েদেয়ে রোজ
থাকতে হবে পরিপাটি।
তাই তো দেখছি,যখন সাজানো
গোছানো টেবিলে চলছে সবার
জলখাবারের সাথে চা বা কফি
পরিবেশন,যুগলবন্দী।সে সময়
পাশাপাশি সযত্নে যোগান দিচ্ছে
খবরের কাগজ।উঁকিঝুঁকি দিয়ে
দেখেছি তাতে সংবাদগুলির সাথে
রয়েছে অজস্র বিজ্ঞাপন,সেসবও
যেন যুগলবন্দী,মগজের খাবার
বৈকি।
‘বিজ্ঞাপন’,বহুল প্রচারিত সংবাদ
মাধ্যমের মাধ্যমে সর্বসাধারণকে
অবহিত করবার জন্যই ব্যাপক
আয়োজন।যখন তখন সকলের
মগজের খাবার।
এ ব্যাপারে এ কথা বলা দরকার,
কালের ঘূর্ণিপাকে আজ পরিস্থিতি
বদলেছে।পরিবর্তিত পরিস্থিতিতে
বহু রাষ্ট্রেই সরকারের পক্ষ থেকে
বহুদলীয় গণতন্ত্রকে নিয়ন্ত্রণের
জন্য সেটি যেন একটি মোক্ষম
হাতিয়ার।
বলা দরকার,‘বিজ্ঞাপনের অর্থ’
যেন খাঁচা-বন্দী গণতন্ত্রের সারথি
সংবাদমাধ্যমের খাবার।দেখো,
একটু অবাধ্য হলেই তার নেই
নিস্তার।
মনিবের নির্দেশে ক’দিন অবাধ্যকে
অভুক্ত রাখলে সে পেটের জ্বালায়,
করে বশ্যতা স্বীকার।
বলি,মনিব বেশ অবগত এই মোক্ষম
হাতিয়ার থাকতে অবাধ্যকে চাবুক
মেরে সবার চক্ষুশূল হওয়ার কী
দরকার?
দেখেছো নিশ্চয়,ক’দিন অভুক্ত রাখার
পরে তাকে ঘৃণা ও অবহেলায় কিছু
খাদ্য সামগ্রী দিলেও মনিবের বশ্যতা
স্বীকার করে সে খাদ্য খায় চেটেপুটে।
ভেবে দেখো,খাঁচায় বন্দীরা আজও
কতটা অসহায়!
বাদলা দিন। সন্ধ্যা ঘনিয়ে আসছে।
আকাশও মেঘাচ্ছন্ন।ঝড় বৃষ্টি আসবে
যেন।ওই শোনো,'মেঘের গর্জন'।
‘গণতন্ত্র’ আজকাল পড়েছে জাঁদরেল
মনিবের হাতে।কারো টুঁ-শব্দ করার
উপায় নেই কোনমতে।
নিত্যকার দেশ বিদেশের খবরাখবর
যোগানদার সংবাদ মাধ্যম বাবুদের
মগজের প্রবেশ দ্বারে প্রত্যহ সকালে
কড়া না-নাড়লে তারা ছটফট করে
মগজের খাবারের অভাবেই।
একটু তাকিয়ে দেখো,আবার এই
সংবাদমাধ্যম দুষ্ট পোষ্যের মতো
একটু নড়েচড়ে বসলে সাথে সাথে
মনিবের নির্দেশেই বন্ধ হয়ে যাচ্ছে
লক্ষ লক্ষ টাকার ‘বিজ্ঞাপন’।
ফিরে দেখো তখন।অদ্ভুত ব্যাপার।
খাবারের অভাবে সংবাদ মাধ্যমের
অভুক্ত অবস্থায় জিব বের করে চিত
হয়ে শুয়ে পড়ে থাকবার যোগাড়!
বলি,মাথা গুঁজে কী ভাবছো বসে?
মনিবের শিকল-বন্দী সংবাদমাধ্যম
এবং সেই সাথে ‘গণতন্ত্র’কে তাদের
বন্দিদশা থেকে মুক্তি দিতে বিজ্ঞাপনে
মনিবের নিয়ন্ত্রণ শিথিল করা বুঝি
দরকার?