ঘোর অমাবস্যা, ঘরের দুয়ারে খিল এঁটে
রাতে ঘুমতে গিয়েছি চাষির এক কুঁড়েঘরে।
বাইরে সেই বাড়ির এক পরিত্যক্ত ঘর
খড়ের ছাউনি দেওয়া সেই ঘরে এক কালপ্যাঁচা
এসে বেঁধেছে বাসা।
ওর পায়ের খর খর শব্দে ঘরে ঘুমানোও দুষ্কর।
বিছানায় শুয়ে ঘরের ভগ্ন টালির ফাঁক দিয়ে দেখেছি
বিষণ্ণ আকাশে তারাগুলো জ্বলেছে মিটিমিটি
ঘরের ভেতর ঢেকেছে নদীর ভাটির টানের মতো
ধেয়ে আসা ঘন অন্ধকারের কালো চাদর।
গভীর রাত, বেড়েছে শীতের বহর
কনকনে ঠাণ্ডায় শরীর কেঁপে উঠেছে থর থর।
এতো রাতে কে আর জাগতে বসে আছে?
পাড়াপড়শিরা সকলে ঘুমিয়ে পড়েছে।
চেষ্টা করেছি খুব, তবু বহুক্ষণ ঘুম এলো না
তারপর কখন ঘুমপাড়ানি মাসী এসে শিয়রে বসে
মাথায় হাত বোলাতেই ঘুমিয়ে পড়েছি, জানি না।
স্বপ্নে যা দেখেছি, দুঃস্বপ্ন বলাই ভালো।
দেখেছি কালো পোশাকে শিবের অনুচর নন্দী-ভৃঙ্গীদের
মতো ক’জনকে নিয়ে কে যেন রাতের অন্ধকারে
অতর্কিতে ঘরে ঢুকে তোলপাড় করতে হলো তৎপর।
দলনেতা বাদবাকিদের শোনালো অলক্ষ্মীর নিদান,
‘এখনি খালি কর এই ঘরবাড়ি
এই রাতের অন্ধকারে ঘরের সব সামগ্রী নিয়ে
দূরদেশে দিতে হবে পাড়ি'।
দেখেছি মুহূর্তে ওরা কাজ হাসিল করে চলে গেল।
ভোরে মসজিদের আজানের শব্দে ঘুম ভাঙ্গলো যখন
চোখ মেলে দেখেছি ঘরটা একেবারে শুনশান
বাইরে ভিড় জমিয়েছে বহু পুলিশ ও পাড়াপড়শী।