গদাই, দেখছিস একটা জাতির অবস্থা?
তাদেরও আমার মতো নেই শিরদাঁড়া।
হারিয়ে ফেলেছে। তাই তাদের গড়িয়ে
চলা ছাড়া গতি কি?
বাকিদের তো তেমন নয়, তাই বলে!
তারাও গড়িয়ে চলবে নাকি?
দেখরে গদাই, এ গতির যুগে পথঘাটেও
একটু ফাঁকা আছে নাকি? -যানবাহনেও।
পথিকেরা সবাই বাঁধনছেঁড়া ঘুড়ির মতো
মুখ বুজে ছুটছে, ভাবখানা প্রতিযোগিতা
চলছে যেন, কে নিজের গন্তব্যে পৌঁছবে
আগে।
গদাই, মনে পড়ে সেদিন এই মানুষগুলো
এসেছিল ডেকেছি যখনি ফোনে আমার
বসতবাড়ির অনুতিদুরে মিলনমেলায়।
দেখেছিস নিশ্চয় সেই সংক্ষিপ্ত অনুষ্ঠানের
শেষে প্রীতিভোজের যেটুকু বন্দোবস্ত ছিল
সেটুকু মেটানোর পরে হলো কি?
-সবাই প্রস্তুতি নিলো ফিরতে ঘরে।
মনে পড়ে তাদের আলাদা আলাদাভাবে
ডেকে বলেছি,'ওরে, আমাকেও ফিরতে
হবে ঘরে। তোরা যাস না আমাকে ছেড়ে।
একটু সবুর কর। দেখি, খুঁজে পাই কি
হারিয়ে যাওয়া শিরদাঁড়া।
তারা সবাই ব্যস্ত, পা বাড়ালো ঘরমুখো
কাজের দোহাই দিয়ে। কে আর রাখলো
সেই অনুরোধ?
গদাই, বুদবুদের মতোই ক্ষোভ উগড়ে
বেরিয়ে আসতে পারে তারা চলে গেল
দেখে।
সত্যি তো তাদের রাখতে পারিনি ধরে।
তাই বলে তাদের দোষ কি? এটা তো
গতির যুগ।
আর আমি?
শিরদাঁড়া হারিয়ে সেই জাতির মতোই
থেকে গেলাম বর্জ্য পদার্থের মতো,
পথের ধারে আস্তাকুড়ে।
গদাই, এ শিরদাঁড়া হারানোর পরিণতি।