হে বঙ্গজননী, ‘মনে কি পড়ে,
ওরা বলেছিল, মাঠে খেলা হবে ‘মোরগ লড়াই’?
সে খেলা খুবই উপভোগ্য!
কিন্তু একবারও বলেনি খেলবে যে মোরগ গুলো
ওদের ভবিতব্য কী?'
বলি, এ খেলা কতটা উপভোগ্য, বলা দুষ্কর!
তবে এ খেলায় পরাক্রমশালী নখরদের আঘাতে  
দুর্বলরা ডানা ঝাপটে মরবে এ কথা নিশ্চিত,
আর সেই করুন দৃশ্য দেখা খুবই কষ্টকর
তবে নির্মমতায় যাদের হৃদয়ের বাঁধ ভাঙে না
ওরা হয়তো গ্যালারীতে বসে সদলবলে
তাড়িয়ে তাড়িয়ে উপভোগ করে এ খেলা।
যাই বলো বঙ্গজননী, তথাকথিত বহু বুদ্ধিজীবী
পরিণাম না-ভেবে উদ্যোক্তাদের এ কাজে দিয়েছে সায়।
ভাবলো, মোরগ গুলো মরলে তাদের কী আসে যায়?
সেও ভাবেনি, ‘মোরগগুলো আসবে কোত্থেকে?’
আর লড়াই করতে গেলে ওদের কত রক্ত ঝরবে?
বলার অপেক্ষা রাখে না, এই খেলার উদ্যোক্তারা
শলাপরামর্শ করে আগেভাগে মনঃস্থির করেছিল
তোমার সন্তানদের নামাবে এই খেলায়।
বঙ্গজননী, হয়তো এ বিষয়ে তোমার ছিল না সায়
তবুও তাদের এ কাজে রুখে দাঁড়াতে পারোনি,
দু’বেলা সন্তানদের অন্ন যোগানোর বাধ্যবাধকতায়
অসহায় জননী, পাঁচ’শ/হাজার টাকার বিনিময়ে
হিংসাশ্রয়ী এ খেলা খেলতে সন্তানদের দিলে সায়।
দেখলে, উদ্যোক্তারা তাদের মাঠে খেলতে নামালো
ভয়ে তোমার বুক দুরু দুরু করে উঠলো,
গৃহকোণে বসে গুরু নামও জপ করলে
বলো, এসব সত্ত্বেও সন্তানদের বাঁচাতে পারলে কি?
এখন তাদের মরদেহ দেখে গুমরে কেঁদে করবে কী?
বলি, সব মরদেহগুলো জড়ো করতে এখনও বাকি
গণনাকারীরা বসেছে সেগুলো গণনা করতে
সবেমাত্র গুনছে এক দুই তিন.....
ঘোমটায় মুখ লুকিয়ে সে সংখ্যা কান পেতে শুনছ?
ভাবছো এখানেই গণনা শেষ?
এ কথা না-বললেই নয়, শোনো বঙ্গজননী,
মরলো কত গোনা হয়নি শেষ,
বহু মরদেহ এখনো গুনতে বাকি!