বলতে বাধা নেই,জানা ছিল না
আগে ‘বিজ্ঞাপন’এর শুভ সূচনা
কোথায় এবং কবে থেকে।মনের
ভিতর‘কৌতূহল’ দিলো সুড়সুড়ি।
বলো,তখন কী করতে পারি?
তড়িঘড়ি সবজান্তা র কাছে গিয়ে
জিজ্ঞেস করেছি তাকে,‘বলো তো
দেখি,বিজ্ঞাপন এর শুভ সূচনা
কোথায় এবং কবে থেকে’?
আগেও দেখেছি,সে হার মানে না
সহজে।বললো,‘খ্রিঃপূঃ ৭০০ বছর
আগে চীনের ইনান শহরে’।
ভাবো,তারপর থেকে ভাগীরথী
এবং পদ্মা নদী দিয়ে কত জল
গড়িয়েছে!
বিশ্ব জুড়ে‘বিজ্ঞাপন’এর স্বীকৃতি
ও কৌলীন্য জুটেছে।বলো,তখন
কে জানতো তার পরিণাম টা
কোন দিকে কতদূর গড়াবে?
তার সম্মোহনী ক্ষমতা দেখে
তাকে শিল্পপতি ও বণিকেরা
যে লুফে নেবে তা কি বলার
অপেক্ষা রাখে?হলো ও তাই।
তারা ব্যবসা-বাণিজ্যে বাজার
দখলের নেশায় কাজে লাগালো
তাকে।নিশ্চয় জানো,বিজ্ঞাপনের
চমক বড়ই অদ্ভুত।ক্রেতাদের
মগজ ধোলাই-এর জন্য রয়েছে
সু বন্দোবস্ত।চমকের মোড়কের
অভাবে অনেক ভালো সামগ্রীও
অদৃশ্য হয় বাজার থেকে।আবার
চমকের দৌলতে ভালো-মন্দ বহু
সামগ্রীর বাজার দখল করতেও
সময় লাগে না মোটে।
শুনেছি একটি বৈঠকি আড্ডায়,
একসময় ভোটের প্রার্থীদের নাম
পণ্যের তালিকায় অন্তর্ভুক্ত করলে
কেমন হয় সে নিয়ে নাকি হলো
গবেষণা।
পরীক্ষা-নিরীক্ষার কাজের শুরু।
প্রার্থীর গুণগান সম্প্রচার চললো
‘বিজ্ঞাপন’ এর নতুন মোড়কে।
গণতন্ত্রের চতুর্থ স্তম্ভও দাঁড়ালো
এদের পাশে।তারা ব্যবসা করতে
নেমেছে।নীতি,আদর্শ ও সততাকে
বায়ে ঠেলে দিতেও কুণ্ঠা করেনি
মোটে।
ভোটের কারবারিরা ও গণতন্ত্রের
চতুর্থ স্তম্ভ বুঝেছে,ভালো অর্থকড়ি
রোজগার করতে হলে ভোটে কে
জিতলো আর কে হারলো তাতে
তাদের কী যায় আসে?কু-মন
ও অশান্ত এর যুগলবন্দী চেহারা
প্রত্যক্ষ করেছি সেখানে।
এ পেশায় নেমে প্রথমেই শুরু
ভোটারদের মগজ ধোলাইয়ের
কাজ।ভোটারদের মনে বিভ্রান্তি
ছড়াতে ভোটের আগেই তাদের
উদ্যোগে শুরু হলো জনমতের
সমীক্ষা।
তারা তথ্যাদির কারসাজি করে
সত্য ঘটনার থেকে শত-যোজন
দূরে সরে যেতেও দ্বিধা বোধ
করে নি।
অন্ধ গণতন্ত্রের তখন বেহাল
দশা।বোঝেনি সে জল গড়াচ্ছে
কোনদিকে!কু-চক্রীরা কারবারে
মজে।তারা নিজেদের পছন্দের
বিশেষজ্ঞদের নিয়ে শুরু করে
আলোচনা এবং বিতর্ক সভার
আয়োজন।
সবই পূর্ব পরিকল্পিত,সাজানো
গোছানো ব্যাপার।মূল উদ্দেশ্য
তাদের প্রার্থীদিগকে অধিকাংশ
ভোটারদিগের পছন্দের শীর্ষে
তুলে ধরা।আর সেটি বারবার
পুনঃ-প্রচারের ব্যবস্থা করা।
বলি,এভাবে চললে ভোটাররা
দিশা-হীনতায় না ভুগে পারে?
একটা সামাজিক ও মানসিক
ব্যাধি তৈরি হলে কু-চক্রীদের
কী যায় আসে?
ভোটের কারবারিরা ও চতুর্থ
স্তম্ভের কপট উদ্দেশ্য সিদ্ধ হতে
বাধ্য।বলো,তারপর ফলাও করে
তাদের বলতে ক্ষতি কী,‘দেখো
আমাদের সমীক্ষা কত বিজ্ঞান
সম্মত’।
গণতন্ত্র কাঁদে।অশ্রুসজল তার
দিকে ফিরে তাকাতে কষ্ট হয়।
মুখ ঢেকে সে কোনদিকে যাচ্ছে
কে জানে?অযোগ্যরা হয় তো
রাজত্ব করবে আগামী-দিনে।
শিক্ষিতরা অশিক্ষিতদের পা ধরে
স্যার স্যার করে করবে চিৎকার।
দেশে তৈরি হবে বহু চাটুকার।
সেদিন চলন্ত ট্রেনে ক’জন যাত্রী
করছিলো বলাবলি,‘রোজগার যে
ভাবেই করো,প্রথমে একবার যদি
গাঁট থেকে অঢেল কড়ি ভোটের
কারবারিদের কাছে ঢেলে দিয়ে
ভোটে জিতে আসতে পারো,তবে
আর দেখে কে!নানাভাবে অর্থ
রোজগার করে পরবর্তী ভোটের
খরচ আলাদা করে তুলে রেখে
আবার জয় নিশ্চিত করে মন
দাও দেশ সেবার কাজে।
তবে ইচ্ছা করলে দেশকে লুটে
নিতে পারো।সে ক্ষেত্রে হয় তো
এটায়-সেটায় কেলেঙ্কারির একটু
আধটু গন্ধ গায়ে মাখতেও হতে
পারে।সেসব মানিয়ে নিতে হবে,
বৈকি।বরাত খুব মন্দ হলে তবে
জেলের ঘানি টানি টানতে হতে
পারে।নয়তো দেশ তখন তোমার
হাতের মুঠোয়।