সে এক অশীতিপর বৃদ্ধ। ঝাপসা দৃষ্টিতে
পথে চলতে গিয়ে পড়েছে ধন্দে। এ কী
খানাখন্দে ভরা রাস্তা। সে যেন পথের
চেনা ছন্দও হারিয়েছে?
ভাবছে হলো কী? আগেও তো এ পথেই
এসেছে বহুবার। এবার সেই চেনা পথ
কেন অচেনা লাগছে?  
চারদিক দেখেও গন্তব্যের কোনও নিশানা
খুঁজে পেল না। বরং দেখলো পথের পাশে
এক রঙ্গশালা।
ব্যর্থতার ঝুলিটি বুকে চেপে ধরে ভাবলো
শহর ছাড়িয়ে এসে পথের পাশে এ কোন
রঙ্গশালা?
এসময় গ্রাম-গঞ্জ মফস্বলেও কি এসবের
উদ্ভব হলো? ভাবলো, সেখানে কী জানি
কী মঞ্চস্থ হচ্ছে?
কৌতূহলবশত বৃদ্ধ লাঠিতে ভর দিয়ে সেই
রঙ্গশালার দরজায় গিয়ে অন্দরে উঁকি দিয়ে
দেখলো, ‘নাট্যমঞ্চ বেশ সাজানো বারুদের
স্তূপের উপর’। সেখানে চলছে এক রুদ্ধশ্বাস
নাটক।
ঝাপসা চোখের চশমা। ধুতির খুঁট দিয়ে মুছে
সেটি পড়ে দেখলো সেই নাটকের নাম লেখা  
আছে ‘গণতন্ত্রের বিবর্তন’।
দর্শকাসনে তখন অগণিত জনগণ। ঠিক
তখনি নাট্য মঞ্চে গর্জে উঠেছে অজস্র
কুশীলব। তাদের হাতে বোমা ও পিস্তল।
তারা উল্লাসে অনর্গল ঘটালো সে সবের
বিস্ফোরণ।
সেই শব্দে থর থর করে কাঁপলো নাট্যশালা।
দর্শকদের কানে ধরলো ঝালাপালা। ভয়ে
পালাতে গিয়েই তারা হলো দিশাহারা।
তাদের বুকের ভেতর তখন ঠিক যেন শুষ্ক
বালুময় সাহারা।
তারা হৈ-হট্টগোল করেও করবে কী? বন্ধ
নাট্যশালার দরজা। নাটক সম্পূর্ণ না-দেখে
কেউ এ নাট্যশালা থেকে পালিয়ে বাঁচবে?
সেই পথ রুদ্ধ।